রবিবার, ৯ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ফেসবুকের মাধ্যমে ১৪ বছর পর মাকে ফিরে পেল ছেলে

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গা থেকে নিখোঁজের ১৪ বছর পর ফেসবুকের মাধ্যমে মাকে ফিরে পেয়েছেন ছেলে হাফিজুর রহমান। তিনি গত শুক্রবার বিকালে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গোড়ামী গ্রামে এসে মায়ের দেখা পান। বাকপ্রতিবন্ধী মা রহিমা খাতুনকে (৫৫) ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ছেলে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বোনজামাই আবদুল জলিল। তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েন। রহিমা চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শৈলবাড়ী গ্রামের মৃত ভরস মণ্ডলের স্ত্রী। হাফিজ জানান, তার মা রহিমা খাতুন স্বজনদের সঙ্গে অভিমান করে ২০০৩ সালে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন। তারা অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান পাননি। তবে ভ্যানচালক হাফিজুর রহমান মনে মনে তার মাকে খুঁজে বেড়াতেন ঠিকই। অবশেষে ৬ জুলাই খুলনা ক্রিকেট নামীয় ফেসবুকের পেজে নিখোঁজ এক নারীর ছবি পান হাফিজের ভাগ্নে। বিষয়টি তিনি হাফিজকে জানান। এরপর ফেসবুকে লেখা থেকে জানতে পারেন, এক বাকপ্রতিবন্ধী নারী চুনারুঘাটের গোড়ামী গ্রামের দুলাল তরফদারের বাড়িতে রয়েছেন। ছবি দেখে হাফিজ তাকে তার মা বলে শনাক্ত করেন। পরে ফেসবুকের মাধ্যমে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে হাফিজ তার বোনজামাই আবদুল জলিলকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার বিকালে গোড়ামী গ্রামে যান।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর দুলাল তরফদারের বাড়িতে লোকজনের ঢল নামে। মাকে পেয়ে হাফিজ হন মহাখুশি। সবার উপস্থিতিতে হাফিজ তার মাকে শনাক্ত করেন। মাও সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। তত্ক্ষণাৎ ইউপি মেম্বার আবদুল মান্নান, মুরুব্বি হাজী হাছন আলী, সমাজসেবী আবদুল মালেক, সায়েম তালুকদারসহ এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে লিখিত দিয়ে রহিমা খাতুনকে নিয়ে আসেন হাফিজ।

গোড়ামী গ্রামের দুলাল তরফদার জানান, ২০০৩ সালে তার আত্মীয় একই উপজেলার মজলিশপুরের বাসিন্দা আবদুল মতিন মিয়া রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। শাকির মোহাম্মদ বাজারের কাছে তিনি এক নারীকে পেয়ে বাড়ি নিয়ে যান। তিনি এই নারীর স্বজনদের সন্ধান পেতে চেষ্টা করেন। কিন্তু সে সময় তার কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি। তাই মতিন মিয়া বাড়িতে এই নারীকে প্রায় আট বছর লালন-পালন করেন। দুলাল তরফদার বলেন, ‘পরে তাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছি প্রায় ছয় বছর হলো। এরই মধ্যে পত্রিকায় এই নারীর স্বজনদের সন্ধান পেতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি।’ তিনি জানান, ৫ জুলাই রহিমার ছবিসহ লেখা গোড়ামী তালুকদারবাড়ির শাহনেওয়াজ তালুকদারের ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। ছবিটি শেয়ার করেন একই বাড়ির রায়হান তালুকদার। তারপর এ ছবি শেয়ার করেন শায়েস্তাগঞ্জের শফিউল রাহাদ। পরে তিনি ছবিটি খুলনা ক্রিকেট পেজে পোস্ট করেন। সেই পেজ থেকে হাফিজের ভাগ্নে ছবিটি পান।

সর্বশেষ খবর