শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বানরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাজনগর চা বাগানের নতুন টিলা এলাকার বাসিন্দা চা শ্রমিক সুদর্শন যাদব গোয়ালা (৪০)। বাগান এলাকায় তার ধানি জমি প্রায় দুই একর ও দুই-একটা টিলা জমি রয়েছে। ধানি জমিতে তিনি ধান চাষ করেন আর টিলা জমিতে রয়েছে বিভিন্ন ফল-ফলাদির গাছ-গাছালি। গ্রীষ্মের ভরা মৌসুমে গাছগুলো আম, জাম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের ভারে নুয়ে পড়েছিল। ভাবছিলেন, এবার ফল বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করবেন। কিন্তু তার সেই সাধ আর পূর্ণ হলো না। সুদর্শন যাদবের টিলা এলাকায় লাগানো ফলের গাছের সব ফসল হাজারো বন্য বানর নষ্ট করে দিয়েছে। বানর তাড়াতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। দুই-একটা বানর এলে তাড়িয়ে দিতেন। একবার তাড়ালে দলবেঁধে শত শত বানর এসে হামলে পড়ে ফলের বাগানে। তছনছ করে দিয়ে যায় সব। এতে তার প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বানরের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে প্রতিকার চেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেন তিনি। চা শ্রমিক সুদর্শন যাদব গোয়ালা বলেন, বানরের যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারছি না। চা শ্রমিক হিসেবে যা পাই তা দিয়ে তো পরিবার চালানো সম্ভব নয়। বাড়ির আঙিনায় টিলা এলাকায় কাঁঠাল, আম, জামসহ গ্রীষ্মের বিভিন্ন ফলের গাছ লাগিয়েছি। এসব ফল বিক্রি করে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে বাগানের বানরগুলো এসব ফসল নষ্ট করছিল। এর পরও কিছু ফল বিক্রি করা যেত। বানরের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন একটা-দুইটা বানর আসে না। দলবেঁধে হাজারো বানর আসে। এবছর আমার পুরো ফসলই নষ্ট করে দিয়েছে। এ ক্ষতি আমার পক্ষে পুষানো সম্ভব নয়। আমি এর প্রতিকার চাই। বানরের বিরুদ্ধে লিখত অভিযোগ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, বন্যপ্রাণী— এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ দেখে। আমি অভিযোগটি তাদের কাছে পাঠিয়ে দেব। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তবীবুর রহমান বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। বন এলাকা বন্যপ্রাণীদেরই আবাসস্থল ছিল। আমরাই বিভিন্নভাবে তাদের তাড়িয়ে দিয়ে বাগান করেছি। আমাদের মতো দেশে একমাত্র বাঘ যদি কোনো ক্ষতি করে তাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আইন রয়েছে। ভারত বা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম চালু আছে। হয়তো একসময় আমাদের দেশেও সেই নিয়ম চালু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর