দীর্ঘ ছয় বছর ধরে শিকলবন্দী থাকার পর মুক্ত হয়েছেন ফাতেমা আক্তার। গতকাল দুপুরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগে নেওয়া হয়। ফাতেমার সঙ্গে তার বাবা মো. মহিবুর রহমান ও মা আছিয়া খাতুনও আছেন। বাবা মহিবুর বলেন, ‘বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে ফাতেমাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। দোয়া করবেন, মেয়েটা যেন তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে ওঠে।’ গত রবিবার ফাতেমাকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মবিন উদ্দিন ও কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন হাবিবুর রহমানসহ একটি দল ফাতেমাকে দেখতে যায়। ডেপুটি সিভিল সার্জন চিকিৎসক মজিবুর রহমান জানান, ফাতেমা সিজোফ্রেনিয়া রোগে ভুগছেন। কিশোরগঞ্জে চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এক মাস থাকলে ফাতেমা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ফাতেমা আক্তার ২০১১ সালে উপজেলার হোগলাকান্দি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। এ কারণে বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। তখন থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন। শুরুতে কিছুদিন চিকিৎসা করানো হয়। তবে টাকার অভাবে স্থায়ী কোনো চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। মা-বাবাসহ কাউকে সামনে পেলে ফাতেমা প্রায়ই দা নিয়ে কোপ দিতে যান বলে জানিয়েছিলেন তার বাবা। সে জন্য তাকে শিকলবন্দী করে বদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখা হয়। এভাবেই প্রায় ছয় বছর বন্দী অবস্থায় কেটে গেছে ফাতেমার।