বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

নৌ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

নৌপরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও শিপ সার্ভেয়ার এ কে এম ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। তার সম্পদের হিসাব চাইবে দুদক। তিনি কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। গতকাল ফখরুল ইসলামকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। দুদক জানিয়েছে, ঘুষ না পেলে নৌযানের নকশা অনুমোদন করতেন না। নৌযানের আকারভেদে ঘুষের এই হার ওঠা-নামা করত। নৌযান ছোট হলে ঘুষের দর কম হতো। আর আকার বড় হলে ঘুষের দরও বেড়ে যেত কয়েক গুণ। নিজ কার্যালয়ে বসেও ঘুষ নিতেন তিনি।

দেশে চলাচলকারী যান্ত্রিক নৌযানগুলোর নকশা নৌপরিবহন অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিতে হয়। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের বিভিন্ন তারিখে ২২টি নৌযানের নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনি বেঙ্গল মেরিন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস নামের শিপিং প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ গ্রহণকালে গ্রেফতার হন। এ বিষয়ে মতিঝিল থানায় মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২২ নৌ-যান থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের অপর একটি সূত্র জানায়, নৌযানের এ তালিকার আকার আরও বড় হতে পারে। দুদকের সূত্র আরও জানায়, ফখরুল ইসলাম নিজ কক্ষে দফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আসা পছন্দ করতেন না। তার দফতরে নৌযানের নকশা অনুমোদনের জন্য জমা পড়লে, তিনি বিশেষ একটি মাধ্যম পাঠিয়ে যোগাযোগ করতেন। এ ছাড়া যে ২২ নৌযান থেকে ফকরুল ইসলামের আর্থিক সুবিধার অভিযোগ উঠেছে সেগুলো হলো— এমভি নওফেল লিহান, এমভি শতাব্দী আদনান, এমভি সূর্য্য বানু, এমভি দারুল মাকাম, এমভি পেয়ারা-৩, ৪, ৫ ও ৯, এমভি আদিবা তাইয়েবা, এমভি আকতার বানু, এমভি নাবিল খান-৬, এমভি ইউসুফ আরাফাত-৬ ও ৭, এমভি মারিয়া রহমান-১, এমভি বরীফ-১ ও ২, এমভি বোরহান সরদার, এমভি সাউথ মায়ামী, এমভি বিউটি অব নাবিলা, এমভি বিউটি অব নাজিলা, এমভি শেখ মো. লুত্ফুর রহমান ও এমভি রোহানী-১। এ নামীয় জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদফতর, বিআইডব্লিউটিএ ভবন, মতিঝিল, ঢাকায় জমা দেওয়া হয়। অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল অধ্যাদেশ-১৯৭৬ এর ধারা ৫(ক) অনুযায়ী নকশা জমা হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ অনুমোদন দিতে হবে। এমন নিয়ম তিনি মানতেন না। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নৌ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। সব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিগগির তার সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিস পাঠাবে দুদক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর