জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকলেও ঢাকা-৯ (১৮২- খিলগাঁও, মুগদা, সবুজবাগ) আসনে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। এ আসনে এবারও লড়াই হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাবেক রাজনৈতিক সচিব সাবের হোসেন চৌধুরী বর্তমানে এ আসনের এমপি। এবারও দল তার ওপরই আস্থা রাখতে চায়।
অন্যদিকে আইনি জটিলতা না থাকলে বিএনপির মনোনয়ন পাবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। কোনো কারণে মির্জা আব্বাস
নির্বাচনে অংশ না নিলে এ আসনে প্রার্থী হবেন তার স্ত্রী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে এ এলাকার ভোটারদের মনে কৌতূহল বাড়ছে— কে হচ্ছেন সাবের হোসেন চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী? ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন দলটির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা। তাকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাবের হোসেন চৌধুরী। দশম সংসদ নির্বাচনেও তিনি টানা বিজয়ী হন। এই আসন থেকে এর আগে ১৯৯৬ (মুগদা, সবুজবাগ, মতিঝিল) সালে নৌকা নিয়ে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্রীড়ানুরাগী সাবের হোসেন চৌধুরী। সে সময় তিনি বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে পরাজিত করেন। তিনি বর্তমানে ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সাবের হোসেন চৌধুরীকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। স্থানীয়দের মতে, সাবের হোসেন চৌধুরীর সর্বত্র স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে। আইপিইউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে তিনি উচ্চপর্যায়ে নিয়ে গেছেন। তিন মেয়াদে এমপি থাকা অবস্থায় সাবের হোসেন চৌধুরী কখনো অন্যায়ের কাছে আপস করেননি। মাঠে তত্পরতা না চালালেও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশ্রাফুজ্জামান ফরিদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন সরকার পলাশ দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন।
বিএনপি থেকে এবার এ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। তিনি এই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। ২০০১ সালে তিনি এ আসন থেকে ধানের শীষ নিয়ে এমপি হয়েছিলেন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটির তিনি বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। এবারও দলের মনোনয়ন পেতে পারেন হেভিওয়েট এই নেতা। আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন চৌধুরী ও বিএনপিতে মির্জা আব্বাস মনোনয়ন পেলে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এই আসনে। তবে মামলাসহ আইনি জটিলতায় যদি মির্জা আব্বাস প্রার্থী না হতে পারেন সেক্ষেত্রে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস প্রার্থী হতে পারেন। এ ছাড়া এই আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন দলের স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা, সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার ও মহানগর বিএনপির সহসভাপতি প্রবীণ নেতা ইউনুস মৃধা, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব। এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য দেলোয়ার হোসেন খান। তিনি নির্বাচন সামনে রেখে নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছেন।