রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

সীমান্তপথে আসছে ভারতীয় গরু

লোকসানের আশঙ্কা খামারিদের

বেনাপোল প্রতিনিধি

কোরবানি ঈদ সামনে রেখে বেনাপোল ও শার্শার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বৈধ পথে ভারত থেকে গরু আসতে শুরু করেছে। তবে সীমান্তে অনুমোদিত খাটালগুলোর মাধ্যমে  কত সংখ্যক গরু আসছে এর হিসাব কারও কাছে না থাকলেও হিসাব রয়েছে নাভারন কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসে। এ হিসাবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এক হাজার ৬৭০টি গরু ও ৩২০টি ছাগল ভারত থেকে এসেছে। তবে এ সংখ্যা  প্রতিদিনই বাড়ছে। অব্যাহত থাকবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত— এমনটাই জানালেন  কাস্টমস ও ভ্যাট অফিসের কর্মকর্তারা। শার্শা উপজেলায় এ বছর ৫৬ হাজার কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। কারণ উপজেলায় কোরবানি ঈদে পশুর চাহিদা রয়েছে ৫৫ হাজার পশুর। এর ওপর ভারতীয় গরু ব্যাপকভাবে আসা শুরু হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন সেখানকার খামারিরা। তারা এ বছর  ব্যবসায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন। শার্শা উপজেলার ৩৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভারতীয় সীমান্ত। এ সীমান্তের বেশির ভাগ স্থান জুড়ে রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। তবে যেসব স্থানে বেড়া দেওয়া নেই, সেসব পথে অনায়াসে গরু হেঁটে বাংলাদেশে চলে আসছে। আর যে পথে কাঁটাতারের বেড়া, সেখানে নেওয়া হচ্ছে ভিন্ন কৌশল। গরু-ছাগল মাঠে চরানোর নাম করে গেট দিয়ে গরু পার করে দিচ্ছে ভারতীয়রা। এদিকে বৈধ পথে গরু, ছাগল ও ভেড়া আনার জন্য শার্শায় কয়েকটি খাটালের অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তিন বছর ধরে ভারতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএসএফের কঠোর হস্তক্ষেপে পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা এই চারটি খাটাল দিয়ে সীমিতসংখ্যক গরু আসত। বর্তমানে এ চিত্র পাল্টে গেছে। এখন প্রতিদিনই এ পথে হাজার হাজার গরু আসা শুরু হয়েছে, যা দিন দিন বাড়বে বলে জানিয়েছেন  ব্যবসায়ীরা।

যশোরের নাভারন পশু শুল্ক করিডর সূত্রে জানা যায়, ১ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত এক সপ্তাহে শার্শার বিভিন্ন করিডর দিয়ে বৈধ প্রক্রিয়ায় এক হাজার ৬৭০টি ভারতীয় গরু ও ৩২০টি ছাগল এসেছে। এ অফিসে দায়িত্বরত  কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সুমা মনি জানান, শার্শা সীমান্তের চারটি পশুর হাট পুটখালী, অগ্রভুলট, দৌলতপুর ও গোগা দিয়ে যে পশু আসে, নাভারন করিডরে এর ভ্যাট আদায় করা হয়। হিসাব করে দেখা গেছে, বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০টি ভারতীয় পশু সীমান্ত পার হয়ে এ দেশে আসছে। ঈদ সামনে রেখে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তার ধারণা।

এদিকে কোরবানি ঈদের আগে পশু আমদানি বেড়ে গেলে বা ভারত থেকে পশু আসা বৃদ্ধি পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশি খামারিরা। তারা যে আশা নিয়ে গরু মোটাতাজা করেছিলেন, এখন পশুর দাম না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে শার্শা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পশু আসা প্রতিরোধে বিজিবির কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন তারা।

শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সিংহ জানান, সীমান্তপথে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ পশু আসে। এটা স্বাভাবিক। তবে দৈনিক হাজার হাজার পশু এলে দেশি খামারিরা লোকসানে পড়বেন। এটা অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে। এ অফিসের হিসাবমতে, কোরবানি উপলক্ষে শার্শা উপজেলায় ৫৬ হাজার পশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে গরু ২২ হাজার, ছাগল ৩৩ হাজার  ও ভেড়া রয়েছে ১ হাজার। আর উপজেলায় কোরবানিতে ৫৫ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে।  সে ক্ষেত্রে  এ উপজেলায় বাইরে থেকে কোনো পশু আমদানি করার প্রয়োজন পড়বে না।

সর্বশেষ খবর