রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
নয়াদিল্লির চিঠি

চীনবিরোধী শক্তিশালী আন্তদেশীয় মঞ্চ চায় ভারত

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

দোকলাম নিয়ে চীনের সঙ্গে সংঘাতের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে একটি চীনবিরোধী মঞ্চ শক্তিশালী করার জন্য সক্রিয় হয়ে গেছে মোদি সরকার।

বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমারের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক তৎপরতা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আগামী মাসে তা আরও বাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাঁচ দিনের ভারত সফর শুরু করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। এর আগে কাঠমান্ডুতে গিয়ে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে দেউবার সঙ্গে দীর্ঘ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা  স্বরাজ। নেপালকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে— সড়ক, অন্যান্য পরিকাঠামো, জলবিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জোরালো সহযোগিতা করবে নয়াদিল্লি। চলতি সফরে এই ক্ষেত্রগুলোতে একাধিক চুক্তিপত্র সই হবে ভারত-নেপালের সঙ্গে। মূল উদ্দেশ্য, সে দেশে চীন যে ভারতবিরোধী মনোভাব তৈরি করতে উসকানি দিচ্ছে তা প্রশমিত করা। আগামী মাসে বাংলাদেশ যাওয়ার কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের পর, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে এখনো সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। তবে সেই জটিলতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আটকে না রেখে শিল্প, বাণিজ্য, যোগাযোগ, পরিকাঠামো নির্মাণে বিভিন্ন চুক্তি রূপায়ণের দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। ভারত নতুন করে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বাংলাদেশকে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে কোন প্রকল্পগুলো এর আওতায় আসবে তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হবে। বাংলাদেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বেইজিং তার প্রভাব ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে, এই মর্মে সাউথ ব্লকের কাছে ধারাবাহিকভাবে রিপোর্ট আসছে। তিস্তা চুক্তি রূপায়ণে এখনো ভারতের ব্যর্থতা চীনকে যাতে ঢাকার মাটিতে বাড়তি সুযোগ না-করে দেয় সেটা দেখা এখন সাউথ ব্লকের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের মধ্যে যে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা যাতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লঘু না হয়ে যায় তা নিশ্চিত করতেই সুষমার এই সফর বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এবং নেপালের পাশাপাশি ভারত ও চীন দুই দেশেরই প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমারের প্রতিও বাড়তি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রীর মিয়ানমার সফরের কথা। সে দেশের নেত্রী অং সান সু চি সম্প্রতি দুবার চীন সফর করেছেন। কূটনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে সু চির, যা ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। এমন কিছু বিবৃতিও তিনি দিয়েছেন যা থেকে স্পষ্ট চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও পোক্ত করার দিকে এগোচ্ছে মিয়ানমার। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরটিকে তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। গত মাসে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সুষমা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সে দেশের বিমানবন্দরটি পরিচালনা এবং উন্নয়নের ভার ভারতের হাতে তুলে দিতে চলেছে কলম্বো। বিষয়টি ভারতের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান কারণ এই বিমানবন্দরটি চীন পরিচালিত গভীর সমুদ্রবন্দরের সন্নিকটেই।

সর্বশেষ খবর