সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাড়ি ফিরল তোফা-তহুরা

চাকরি পাচ্ছেন বাবা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাড়ি ফিরল তোফা-তহুরা

গোলাপি রঙের জামা পরেছে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা হওয়া তোফা ও তহুরা। একজন মা শাহিদা বেগমের, আরেকজন বাবা রাজু মিয়ার কোলে। কখনো কাঁদছে, কখনো হাসছে। সবাই আদর করছে তাদের। সবার মনোযোগের কেন্দ্র বিন্দুতে তারা। তবে সেটা বোঝার বয়স তাদের হয়নি। প্রায় দুই মাসের মাথায় হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছে তোফা-তহুরা। গতকাল দুপুরে তাদের বিদায় জানাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তোফা-তহুরার বাবা-মায়ের হাতে বিদায়ী ছাড়পত্র তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তহুরাকে কোলে নিয়ে আদরও করেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকরা তোফা ও তহুরাকে নতুন জীবন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক দলকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। বাবা-মায়ের কোলে তারা বাড়ি ফিরছে, এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কিছু নেই। চিকিৎসকদের এই দল যেভাবে কাজ করেছেন, তিনি তা অন্যদের অনুসরণ করতে বলেন।

তোফা-তহুরাকে সহযোগিতা করতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এদের সাহায্য করলে ভবিষ্যতে হয়তো তারা নিজেরাই চিকিৎসক হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তোফা-তহুরার বাবা রাজুর জন্য একটি চাকরির আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসচিব সিরাজুল ইসলাম, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সরা উপস্থিত ছিলেন। ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাহনুর ইসলাম বলেন, তোফা ও তহুরা ভালো আছে। অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করছে। গতকাল তোফা বসতে শিখেছে। তাদের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায় সুন্দরগঞ্জে পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের আরও দুবার অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হবে। তবে দিনক্ষণ পরে জানানো হবে। এখন তাদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন। তাই তাদের বাবা-মায়ের নামে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে একটি যৌথ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছে। পিঠের নিচ থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে জন্মেছিল গাইবান্ধার তোফা-তহুরা। গত ১৬ জুলাই ‘পাইগোপেগাস’ শিশু তোফা-তহুরাকে ঢামেক হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১ আগস্ট চিকিৎসকদের ২০ থেকে ২২ জনের একটি দল দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে জোড়া লাগা তোফা ও তহুরাকে আলাদা করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর