শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জব্দ রংপুর ডিসির কর্মচারীর দেওয়া ২৪১টি আগ্নেয়াস্ত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা (জেএম) শাখার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর শামসুল ইসলামের দেওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের মধ্যে ৩১৬টির হদিস পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত ২৪১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৭১১টি কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান জানিয়েছেন। জব্দকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে একনলা বন্দুক ২০টি ও শটগান ২২১টি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, শামসুল ইসলাম জেএম শাখায় ২০০৩ সালের ২ ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের ৬ জুলাই এবং ২০১১ সালের ১৭ মে থেকে চলতি বছরের ১৭ মে পর্যন্ত অফিস সহকারী পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় রংপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর জাল করে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছিলেন। দুই দফায় আট দিন রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে শামসুল ইসলাম তিন শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার কথা স্বীকারও করেন। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩১৬টি আগ্নেয়াস্ত্রের হদিস পাওয়া গেছে। শামসুলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যারা লাইসেন্স নিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেককে গত ২ আগস্ট থেকে নোটিস দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স গ্রহীতারা পর্যায়ক্রমে তাদের আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ দুদক কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে সেগুলো জব্দ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা আতিকুর জানান, অবৈধভাবে লাইসেন্স গ্রহীতাদের মধ্যে ২৬২ জনই অবসরপ্রাপ্ত সেনা, বিজিবি ও পুলিশ সদস্য। ১৪ জন নিজেদের ভুয়া অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য পরিচয়ে এবং ভুল নাম-ঠিকানা দেখিয়ে লাইসেন্স নেন। ঢাকার বনানীতে রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তরুণী ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদের দেহরক্ষী রহমতও শটগানের লাইসেন্স নিয়েছেন শামসুলের কাছ থেকে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৭ মে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে শামসুল ইসলামের অনুপস্থিতিতে তার কক্ষের আলমারির তালা ভেঙে সেখান থেকে নগদ ৭ লাখ ১০০ টাকা, তার নামে ১১ লাখ টাকার দুটি এফডিআর এবং দুই লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ইস্যুকরা ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ লাইসেন্স জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অমূল্য চন্দ্র রায় বাদী হয়ে ১৮ মে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরেরদিন জেলা প্রশাসক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন শামসুল। তার বাড়ি রংপুর নগরীর খোর্দ্দ তামপাট এলাকায়। গত ৫ জুলাই রাতে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা থেকে শামসুলকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

 

সর্বশেষ খবর