শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মন্ত্রীর পায়ে পড়ে শিক্ষিকার কান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

মন্ত্রীর পায়ে পড়ে শিক্ষিকার কান্না

গতকাল যশোরে ৪৬তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে গিয়ে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বেলা ১২টার দিকে মন্ত্রীর গাড়িবহর সার্কিট হাউসের দিকে যাওয়ার সময় স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে সহস াধিক শিক্ষক-কর্মচারী মন্ত্রীর গাড়িবহর আটকে দিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েন। প্রায় ২৫ মিনিট এ অবস্থা চলার পর মন্ত্রী, সচিব সোহরাব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও যশোরের জেলা প্রশাসক গাড়ি থেকে নেমে আসেন ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বক্তব্য শোনেন। এরই একপর্যায়ে একজন শিক্ষিকা ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে মন্ত্রীর পা জাপটে ধরে কান্নাকাটি শুরু করেন। ওই শিক্ষিকা তাদের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি তুলে ধরে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি জানান। মন্ত্রী ওই শিক্ষিকার মাথায় হাত দিয়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। এর পরপরই পুলিশ সদস্যরা ওই শিক্ষিকাকে দ্রুত ওই স্থান থেকে সরিয়ে নেন। পরে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যে আচরণ করছেন তাতে শিক্ষক সমাজের মানহানি হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের বেতন-ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় না হওয়ায় কিছু হচ্ছে না। এ নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। আমাকে শুনতে হয়েছে, আমি সরকারের মন্ত্রী না, শিক্ষকদের। আমি বরাবর বলি আমি শিক্ষকদের মন্ত্রী। শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দিতে হবে, তাদের জীবনমানের উন্নয়ন করতে হবে। সে জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। অর্থমন্ত্রীর হাতে পায়ে ধরেছি। অনেক চেষ্টায় তিনি কিছুটা নরম হয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘বৈষম্য নিরসনে অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে একটি কমিটি করেছে। এ কমিটি অর্থছাড়ের ব্যাপারে চেষ্টা করছে’। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে আমি দোযখে যেতেও রাজি। প্রয়োজনে আবারও অর্থমন্ত্রীর হাতে-পায়ে ধরব। তবে আপনারা এ ধরনের আচরণ করে অর্থ প্রাপ্তির রাস্তা বন্ধ করে দিয়েন না। আমি ঢাকায় গিয়ে অর্থমন্ত্রীকে বলব যশোরের শিক্ষকরা আপনাকে সালাম দিয়েছেন। তাদের ব্যাপারে একটু নজর দেওয়ার আবেদন করেছেন। আপনারা দোয়া করেন যাতে অর্থমন্ত্রীর মন একটু নরম হয়। তাহলেই সব সমস্যা কেটে যাবে’। মন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হলে শিক্ষকরা মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন। এরপর শিক্ষকরা সড়ক ছেড়ে দিলে মন্ত্রীর গাড়িবহর সার্কিট হাউসের উদ্দেশে রওনা হয়। এর আগে সকালে মন্ত্রী যশোর উপশহর ক্রীড়া উদ্যানে আয়োজিত ৪৬তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর