রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে মিজান বিএনপিতে মঞ্জু

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

আওয়ামী লীগে মিজান বিএনপিতে মঞ্জু

বৃহত্তর খুলনার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু খুলনা-২ (সদর) আসনটি বরাবরই গুরুত্ব্বপূর্ণ। ফলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে এটি

মর্যাদার আসন। আগামী নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে আসনটিতে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কর্মকাণ্ড বেড়েছে।

খুলনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। প্রধান এই দুই দলের বাইরে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরাও মাঠে কাজ করছেন। খুলনা সদর আসনটি বরাবরই বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে    বিজয়ী হন সাবেক স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী। আর ২০০৮ সালে নির্বাচিত হন বিএনপির মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এমপি নির্বাচিত হয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান দলীয় রাজনীতিতে শক্ত অবস্থান গড়তে সক্ষম হয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে আগেভাগেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কমিটি সুসংহত করার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দেওয়া হয়েছে নির্বাচন প্রস্তুতির নানা দিকনির্দেশনা। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দলীয় নেতা-কর্মীর ওপর একক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও সন্দেহ-অবিশ্বাসে খুলনা মহানগর বিএনপির তৃণমূল কিছুটা দিশাহীন। তবে মাঠপর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও সিনিয়র সিটিজেনদের একচেটিয়া সমর্থন রয়েছে মঞ্জুর দিকে। তা ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর ভোটও তার। ১৯৯১ সালে সর্বশেষ জামায়াত আলাদাভাবে এই আসনে নির্বাচনে অংশ নেয়। তখন জামায়াতের প্রার্থী শামসুর রহমান প্রায় ১০ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। এরপর থেকে বরাবর বিএনপির প্রার্থীকেই জামায়াত দলীয়ভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে। জানতে চাইলে সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি বিএনপির রয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে মানুষ আবারও বিএনপিকে নির্বাচিত করবে। বড় দুই দলের বাইরে খুলনা-২ আসনে জাতীয় পার্টির মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত হোসেন বাবুল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল আউয়াল ও মহানগর সহসভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দীনের নাম প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগর সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দীন জানান, সংগঠন থেকে প্রাথমিকভাবে দুজনের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। পরবর্তীতে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তিনি খুলনা-২ আসনের প্রার্থী হবেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স জানান, খুলনা জেলা কমিটি খুলনা-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তার নাম প্রস্তাব করেছে। ঢাকার একটি সংসদীয় আসন থেকেও তার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি নির্বাচন করবেন। খুলনা-২ আসনে জয় পেতে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের রয়েছে সমান আস্থা ও আত্মবিশ্বাস। ফলে শেষ পর্যন্ত কে বিজয়ের মালা পরবেন তা  দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন খুলনা মহানগরবাসী। নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে খুলনা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে ১৬৭০ ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর