শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ঝুঁকির মুখে পরিবেশ-পর্যটন

মানবতার পাশাপাশি অর্থনীতি বাঁচাতে হবে

সেলিনা হোসেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানবতার পাশাপাশি অর্থনীতি বাঁচাতে হবে

মিয়ানমার সরকার একটি জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাদের বাঁচাতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু উন্নতির দিকে এগিয়ে যাওয়া দেশ হিসেবে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভরণ-পোষণ চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আর রোহিঙ্গারা যে এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন তা দেশের পর্যটনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। তাই দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিতে হবে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলকে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার মনোভাবের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা যেন ফিরে যেতে না পারে সেজন্য মিয়ানমার সীমান্ত জুড়ে মাইন পুঁতে রেখেছে। একটা দেশ কতটা অমানবিক হলে এই ধরনের মানসিকতা পোষণ করতে পারে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। দুই দেশের সীমান্তে থাকা নদী পার হয়ে মানুষগুলো জীবন বাঁচাতে ছুটে এসেছে। তাই বাংলাদেশ মানবিকতার খাতিরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও মিয়ানমারকে অবশ্যই তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। তাদের যেন শরণার্থী হিসেবে সীমাহীন দুর্দশার মধ্যে জীবন কাটাতে না হয় এজন্য বিশ্ব বিবেককে এগিয়ে আসতে হবে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত সে দেশের নেত্রী অং সান সু চির মানবিকতা বিবেকের কাঠগড়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে দেশের প্রখ্যাত এই কথাসাহিত্যিক বলেন, আমরা সু চির অধিকার ফিরিয়ে দিতে রাজপথে আন্দোলন করেছিলাম। তিনি যেন নিজ দেশে মুক্ত স্বাধীন মানুষের মর্যাদা নিয়ে থাকতে পারেন এজন্য আমাদের দেশের মানুষ আন্দোলন করেছে। অথচ তিনিই আজ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশ থেকে তাড়িয়ে বিশ্বের কাছে তাদের শরণার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন মা হয়ে এই রোহিঙ্গা শিশুদের কষ্টে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। অথচ আরেক রাষ্ট্রপ্রধান সু চি তার নিজ দেশের শিশুদের এই অসহায় অবস্থা সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশ সরকার মানবিকতা বিবেচনায় সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু দেশ এখন অবকাঠামো, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্চে। ঠিক এ সময় এত বড় ধাক্কা সামলানো দেশের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই কূটনৈতিক দিক দর্শনকে কাজে লাগিয়ে এই মানুষগুলোর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। এই সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য তিনি বিশ্ববাসীকে আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর