বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

গডফাদারদের তালিকা হচ্ছে দুর্গম এলাকায় অভিযান

ডিএনসির তালিকায় ১৫০ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী গডফাদার ১২ জন

সাখাওয়াত কাওসার

সারা দেশে অবৈধ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের সমন্বিত তালিকা হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার মাদক ব্যবসায়ীদের পৃথক তালিকা থাকলেও এবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে একটি বিশেষ তালিকা। ১১ সেপ্টেম্বর ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আটটি সংস্থার প্রতিনিধির বিশেষ ওই বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে তাদের তালিকা জমা দেবে। সব সংস্থার পৃথক তালিকার সমন্বয় করে তৈরি হবে অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা। দুর্গম এলাকা ও প্রভাবশালীদের গ্রেফতারে চলবে সমন্বিত অভিযান। তবে এরই মধ্যে ডিএনসি ১৫০ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা প্রস্তুত করেছে। ডিএনসির মহাপরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন আহমেদ জানান, এত দিন বিচ্ছিন্নভাবে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করলেও এবার সমন্বিতভাবে তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিয়মিতভাবে আন্তসংস্থার প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সূত্র জানায়, ১১ সেপ্টেম্বরের বৈঠকে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), র‌্যাব, বিজিবি, আনসার, ডিএনসি ও কোস্টগার্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সারা দেশে মাদকের বিস্তার নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি। সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার মাদকের রুট বন্ধ করতে পরিকল্পনা অনুযায়ী সমন্বিত অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই প্রভাবশালী এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নানা কারণে তাদের বিষয়টি এড়িয়ে যান। তাদের বিষয়ে প্রতিটি সংস্থার প্রতিনিধিরা আলোচনা করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তালিকায় ব্যবসায়ীর নাম-ঠিকানা, সম্ভাব্য অবস্থান, শারীরিক গঠন, ছবি, থানা হিসেবে মামলার সংখ্যা, গ্রেফতার হয়েছিলেন কিনা এসব তথ্য উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। ডিএনসি সূত্র বলছে, শীর্ষ ১৫০ জন অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে ১২ জন প্রভাবশালী রয়েছেন। তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সারা দেশের মাদক ব্যবসা। বাকি ১৩৮ জনও বিভিন্নভাবে ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সীমান্তবর্তী এলাকায় রয়েছে তাদের নিজস্ব এজেন্ট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘বদলি, পদোন্নতি সর্বোপরি নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক সদস্যই প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীদের বিষয়টি এড়িয়ে যান। সব সময়ই তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হন ছোট ছোট মাদক ব্যবসায়ী। এবার অন্তত তাদের বিষয়ে আলোচনা হবে এবং তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার ব্যাপারে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা যাবে।’

সর্বশেষ খবর