বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মাঝারি বৃষ্টিতেই ঢাকায় হাঁটু পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাঝারি বৃষ্টিতেই ঢাকায় হাঁটু পানি

টানাবর্ষণে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক —জয়ীতা রায়

ভাদ্র গিয়ে আশ্বিনে পড়লেও থামেনি বৃষ্টি। দিনভর দফায় দফায় চলছে মাঝারি আর ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টির আনাগোনা। প্রকৃতির আচরণ দেখে বোঝার উপায় নেই যে এখন ঋতুতে শরৎ। গতকাল রাজধানীতে দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৩৮ মিলিমিটার। আর এতেই ঢাকার পথেঘাটে জমেছে হাঁটু পানি। কোথাও কোথাও হাঁটু ছাড়িয়ে জমেছে কোমর পরিমাণ পানি। এতে আটকে পড়েছে প্রাইভেট কার, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও বাস। আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, রবিবার থেকে আবহাওয়ার এই অবস্থা রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে মেঘ ভেসে আসছে দেশের উপকূলের দিকে। উত্তাল ঢেউ উঠছে দেশের নদ-নদীগুলোয়। রাজধানীতে দমকা হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। গতকালের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকাতেই সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। আজও সিলেট, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রংপুর এবং বরিশালের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। ঢাকা, খুলনা এবং রাজশাহীর কিছু জায়গায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রপাতসহ বৃষ্টির আশঙ্কা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আজও দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত এবং নৌবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল রাজধানীর আকাশজুড়ে ছিল ঘন কালো মেঘের আনাগোনা। মেঘের গর্জন না থাকলেও ছিল দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা। রামপুরা, মালিবাগ, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, শ্যাওড়া পাড়া, কালশী, ধানমন্ডি, মহাখালী এবং পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি ওঠে। কালশী মোড়ে পানি জমে বন্ধ হয়ে পড়ে বাস। বৃষ্টির পানিতে ভাসতে থাকে অটোরিকশা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী যাত্রী এবং শিক্ষার্থীরা। মিরপুর-১০ গামী জাবালে নূর পরিবহনের যাত্রী রায়হান আলী বলেন, উত্তরা থেকে আসতে এ পর্যন্ত দুটি বাস পাল্টিয়েছি। একটু যেতেই গাড়িগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আর তৈরি হয়েছে যানজট। মানুষকে বৃষ্টির মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে রাস্তায়। রুটগুলোতে তৈরি হয়েছে যানবাহন সংকট। একদিকে যানজটে আটকে আছে যাত্রীরা আর অন্যদিকে বৃষ্টির মধ্যে গাড়ির আশায় প্রহর গুনছেন মানুষ। স্কুল থেকে ফিরতে শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা পড়েছেন বিপাকে। কাদাপানিতে পিছলে আহত হচ্ছেন অনেকেই। মিরপুর মাজাররোডের রাস্তায় কাদায় পিছলে পড়ে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। বৃষ্টি হলেই ভাঙাচোরা এই রাস্তা কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। গাবতলী থেকে মিরপুর হয়ে শ্যামলীগামী ভাঙা রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। কুড়িল থেকে রামপুরাগামী খানাখন্দে ভরা রাস্তা বৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে মৃত্যুকূপে। এই রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রী এবং চালকদের নাভিশ্বাস উঠে যায় যাতায়াতে। রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রীর রাস্তাগুলোতে বৃষ্টি আর যানবাহন চলাচলে বিশাল আকারের গর্ত তৈরি হয়েছে। এসব গর্তের কারণে একপাশ দিয়ে গাড়ি পার হলে অন্য পাশ দিয়ে যানবাহনকে অপেক্ষা করতে হয়। রাস্তার কিছু গর্তের মধ্যে ইট দিয়ে ভরাট করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টিতে কাদাপানিতে সয়লাব হয়ে গেছে সড়ক।

সর্বশেষ খবর