সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

তুফান ও মতিনের সম্পদ খোঁজার অনুমতি পেয়েছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বগুড়ার বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার কর্তৃক কিশোরী ধর্ষণ ও মা মেয়ে নির্যাতনের ঘটনার পর তাদের অবৈধ অর্থের হিসাবের সন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২১ সেপ্টেম্বর তুফান সরকার ও তার বড় ভাই আবদুল মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের অনুমতির পত্র পেয়েছে দুদক বগুড়া জেলা কার্যালয়।

জানা যায়, জুলাই মাসের শেষে তুফান সরকার ও মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদের কথা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে তুফান সরকার ও মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য মিলেছে। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়া সূত্রে জানা গেছে, জুলাই মাসের শেষে প্রথমে গণমাধ্যমে তুফান সরকার ও মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদের সংবাদ প্রকাশিত হলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধান (যাচাই-বাছাই) শুরু করে। এরপর বগুড়া কার্যালয় থেকে ২ আগস্ট প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক (তদন্ত) বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে তাদের সম্পদ অনুসন্ধানের অনুমতি চাওয়া হয়। দুদক বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের অনুমতি চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। এই পত্রের পর ২১ সেপ্টেম্বর সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

তুফান ও মতিন সরকারের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে তাদের। হিসাব জমা দিলে ওই হিসাবের তদন্ত শেষ করা হবে। এরপর জমা দেওয়া হিসাবের সঙ্গে মিল না হলে মামলার অনুমতি চেয়ে প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দেওয়া হবে। এ ধরনের মামলায় সর্বোচ্চ ১৩ বছরের শাস্তি হতে পারে। তুফান সরকার ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে এক ছাত্রীকে বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুরের নিজ বাসায় কৌশলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর ঘটনা জানাজানি হলে ২৭ জুলাই বিচারের নাম করে শহরের বাদুরতলার বাসায় ধর্ষিতা কিশোরী ও তার মাকে মারধর করে মাথা ন্যাড়া করে দেন তুফান সরকারের স্ত্রী আশা সরকার ও তার বড় বোন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকিসহ সহযোগীরা। আহত মা-মেয়েকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর হইচই পড়ে যায়।

ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে মূল হোতা তুফান সরকারসহ তার চার সহযোগীকে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় তুফান সরকারকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাথা ন্যাড়া ও মারপিটের ঘটনায় দুটি মামলা করেন। পরে পুলিশ মামলার অপর আসামি তুফানের স্ত্রী আশা, আশার বড় বোন মার্জিয়া হাসান রুমকি, রুমকির বাবা-মা, তুফানের সহযোগীসহ ১১ আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর কয়েক দফা তাদের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। গ্রেফতারদের মধ্যে দুজনের জামিন হয়েছে। মামলার ভিকটিম মা ও মেয়ে বর্তমানে নিরাপত্তার কারণে রাজশাহী ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, তুফান ও মতিন সরকার দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। এসব অবৈধ ব্যবসা করে তারা দুই ভাই অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর