মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তাবলয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তাবলয়

পূজাকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে রাজধানীর মণ্ডপগুলোতে —বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় রাজধানীসহ সারা দেশের ৩০ হাজার পূজামণ্ডপ। র‍্যাব-পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপগুলোয় নিয়ে আসা হয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল নিরাপত্তাব্যবস্থার আওতায়। কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকলেও সব কিছুই আমলে নিয়ে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। ঢাকার ২৩১টি মন্দিরকে তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা। তবে যেসব পূজামণ্ডপে বিদেশি নাগরিকসহ দেশের ভিভিআইপিরা যাবেন সেগুলোকে কঠোর নিরাপত্তার জালে ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘দুর্গাপূজা ও আসন্ন আশুরা উপলক্ষে র‍্যাবের সব ব্যাটালিয়নকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি র‍্যাবের গোয়েন্দারা বড় বড় পূজামণ্ডপের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সঙ্গে র‍্যাবের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।’ পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানিয়েছে, আশুরা ও দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে দুই দফায় চিঠি পাঠানো হয়েছে সব কটি জেলার পুলিশ সুপার ও ইউনিটপ্রধানের কাছে। এরই মধ্যে কয়েক দফায় দেশের সব কটি এলাকার পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মাঠ প্রশাসন ও র‍্যাব-পুলিশের কর্মকর্তারা। সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে দফায় দফায় বৈঠক করে ঠিক করা হয়েছে নিরাপত্তা ছক। আশুরা ও দুর্গাপূজা ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত ২০ হাজার সদস্য মাঠ পর্যায়ে সতর্ক রয়েছেন। তবে সরকারবিরোধী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর পাশাপাশি উগ্র-মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো যে কোনো সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে পারে বলে তথ্য রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। সূত্র বলছে, পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব ও র‍্যাবের ডগস্কোয়াড, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা ইউনিট সারা দেশের ৩০ হাজার মণ্ডপে সতর্ক পাহারায় থাকবে। এরই মধ্যে মণ্ডপগুলোর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে। সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানোর বিষয়ে চোখ রাখা হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

প্রতিমা তৈরির স্থানগুলোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আগে থেকেই গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছেন। মহালয়া থেকে শুরু করে দুর্গাপূজার দশমী পর্যন্ত প্রতিটি স্থলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশসূত্র জানিয়েছে, সামনের ধর্মীয় উৎসবকেন্দ্রিক গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে। যে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা পুলিশ সাদা পোশাকে মাঠে তত্পর রয়েছে।

গতকাল ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘ঢাকার ২৩১টি মন্দিরকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে থাকবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। আগতদের আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে।’ পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘দেশের সব কটি পূজামণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবক দলের ছবিসহ তালিকা নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলোয় সিসিটিভি এবং আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য উদ্‌যাপন কমিটিদের বলা হয়েছে। নিয়মিত পেট্রলিংয়ের পাশাপাশি মণ্ডপগুলোয় সাদা পোশাকে পুলিশের সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।’

সর্বশেষ খবর