পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৫৭ পয়সা বা ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
গতকাল বিইআরসি কার্যালয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৮৭ পয়সা (ইউনিট) হারে বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলে সেই প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শেষে বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটি দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে এ সুপারিশ করে। গণশুনানি পরিচালনা করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আজিজ খান ও মিজানুর রহমান।
প্রসঙ্গত, বিউবো চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দেয় বিইআরসিতে। তখন সংস্থাটি ৭২ পয়সা হারে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিল। এরপর বেশ কয়েকমাসে বিদ্যুৎ উত্পাদন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮৭ পয়সা হারে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয় বিউবো। এই বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিদ্যুতের গড় উত্পাদন খরচ ইউনিট প্রতি ৫ দশমিক ৭২ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বর্তমানে ইউনিট প্রতি ৪ দশমিক ৮৫ টাকা হারে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে বিউবোর ইউনিট প্রতি লোকসান হচ্ছে ৮৭ পয়সা। সে কারণে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রয়োজন। বিউবো কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, তাদের ভর্তুকির কথা বলা হলেও তা না দিয়ে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এতে ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। যার সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এর ফলে সংস্থাটি দিনদিন সংকটে পড়ছে। আর অর্থ সংকটের কারণে ওভারহোলিং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির উদ্যোগে প্রতিবাদ : এদিকে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাম রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। গতকাল রাজধানীর কারওয়ানবাজারে টিসিবি ভবনের নিচে সমাবেশ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি বন্ধ ও প্রশাসিক ব্যয় কমিয়ে বিদ্যুতের দাম দেড় টাকা পর্যন্ত কমানো সম্ভব। তিনি এ সময় বিদ্যুৎ ও চালের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ২৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাম সংগঠনগুলোর উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া গণশুনানির প্রতিবাদে যৌথভাবে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক পার্টি (বিডিপি), আমজনতা ইনসাফ পার্টি, সোনার বাংলা পার্টিসহ অন্যান্য সংগঠন। এ ছাড়া বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব থেকে সরে আসার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।