বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জুনের মধ্যে ছয় সিটি নির্বাচন

ডিসেম্বরের শেষে রংপুর, মার্চ-এপ্রিলে গাজীপুর, জুনে রাজশাহী সিলেট খুলনা ও বরিশাল

গোলাম রাব্বানী

জুনের মধ্যে ছয় সিটি নির্বাচন

চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের শেষ দিকে রংপুর সিটিতে ভোট করার চিন্তা করা হচ্ছে। আর আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে গাজীপুর সিটিতে এবং জুনের মধ্যে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেটেও ভোটের প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। তবে গাজীপুরসহ পাঁচ সিটিতে একসঙ্গে ভোট করার প্রস্তাব দিয়েছে ইসি সচিবালয়। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুন মাসের মধ্যে তিন ধাপে বা দুই ধাপে ছয়টি সিটি করপোরেশনে ভোট করার লক্ষ্য ধরে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী বছর ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগেই রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও গাজীপুর সিটিতে নির্বাচন করার প্রস্তুতি শুরু করেছে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন।

দলভিত্তিক এই নির্বাচনে এ বছরের শেষ থেকে শুরু করে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে ভোটগ্রহণের লক্ষ্য ধরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে বলে নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব নির্বাচন শেষ করার লক্ষ্যে যথাসময়ে কাজ শুরু করা হবে। রংপুরের নির্বাচনটা আমাদের এ বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে বা পরের বছর জানুয়ারির শুরুতেই করতে হবে। গাজীপুরের ভোটও মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাকি চার সিটি করপোরেশন একদিনেই করা যেতে পারে আগের মতোই। ইসির কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছরের মে থেকে অক্টোবরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের অগ্রাধিকারমূলক কাজের চাপ থাকবে; নভেম্বর-ডিসেম্বরে তফসিলের আয়োজন চলবে। সেক্ষেত্রে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে ছয় সিটি নির্বাচনের প্রস্তাব থাকছে। তবে ছয় সিটির মধ্যে শুরুতে রংপুর সিটিতে ভোট দিতে চায় ইসি। এ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে কবে নির্বাচন হবে তার চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন। রংপুর সিটির বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান বলেন, আগামী নভেম্বরে তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে চূড়ান্ত সময়সূচির সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন। ২০১২ সালের ডিসেম্বর রংপুরে, ২০১৩ সালের জুনে একদিনে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট সিটি করপোরেশন এবং জুলাইয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট হয়েছে। সিটি করপোরেশনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কার্যকাল দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ছয় মাসের মধ্যে ভোট করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ছয় সিটির নির্বাচনের দিনক্ষণ : রংপুর সিটি নির্বাচন হয়েছিল ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর। প্রথম সভা হয়েছে ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ। আইন অনুযায়ী— এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ, তাই এর ১৮০ দিন পূর্বে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসাবে গত ২০ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে। আগামী বছরের ১৮ মার্চের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। গাজীপুর সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। আইন অনুযায়ী— এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। আগামী বছরের ৮ মার্চ থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আগামী বছরের ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সিলেট সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। আইন অনুযায়ী— এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর। আগামী বছরের ১৩ মার্চ থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আগামী বছরের ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। খুলনা সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। আইন অনুযায়ী— এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। আগামী বছরের ৩০ মার্চ থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আগামী বছরের ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। রাজশাহী সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। আইন অনুযায়ী— এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর। আগামী বছরের ৯ এপ্রিল থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আগামী বছরের ৫ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। বরিশাল সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। আইন অনুযায়ী— এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর। আগামী বছরের ২৭ এপ্রিল থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে। আগামী বছরের ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।

সর্বশেষ খবর