বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আজ মহাসপ্তমী দৃষ্টিনন্দন সাজে পূজামণ্ডপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ মহাসপ্তমী দৃষ্টিনন্দন সাজে পূজামণ্ডপ

রঙিন সাজে সজ্জিত বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পূজামণ্ডপ —জয়ীতা রায়

মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে গতকাল দেশব্যাপী শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মন্ত্রপাঠ, ভক্তদের  শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা আনুষ্ঠানিকতায় সকালে সম্পন্ন হয় মহাষষ্ঠী বিহিত পূজা। মন্দির ও মণ্ডপগুলোয় প্রার্থনায় অংশ নেন ভক্তরা। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস। রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোর মধ্যে এবারও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বসুন্ধরা সর্বজনীন পূজা কমিটির পূজামণ্ডপটি ভক্তদের দৃষ্টি কেড়েছে। আধুনিক ও রুচিশীল সাজসজ্জার জন্য দর্শনার্থীরা পূজামণ্ডপটির প্রশংসা করছেন। দুর্গোৎসবে আজ অনুষ্ঠিত হবে মহাসপ্তমী। দুর্গাপূজার দ্বিতীয় দিন। গতকাল রাজধানীর ঢাকেশ্বরী, পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, মিরপুর, কলাবাগান মাঠের পূজামণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা যায়, মন্দির ও আশপাশ এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গতকাল সকালে ষষ্ঠী তিথিতে সারা দেশের মণ্ডপে মণ্ডপে বেলতলায় হয় তিথি বিহিত পূজা। উলুধ্বনি, শঙ্খনাদ, ঢাকের বোল ও মাতৃবন্দনার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় সকাল ৯টায়। আর চণ্ডীপাঠে মুখরিত ছিল বিভিন্ন মণ্ডপ এলাকা। এ সময় নানা উপাচারে ডালা সাজিয়ে মণ্ডপ-মন্দিরে আসতে থাকেন ভক্তরা। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রঞ্জিত চক্রবর্তী জানান, বিল্ববৃক্ষ মহাদেবের ভীষণ প্রিয়। তাই দেবীকে এই বিল্ববৃক্ষতলে আবাহন করা হয়। ষষ্ঠীর দিনে বিল্ববৃক্ষতলে দেবী আবাহনের মধ্যে সংকল্প করা হয়। আজ মহাসপ্তমীতে পূজামণ্ডপগুলোয় সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে দেবীর চক্ষুদান ও বিহিত পূজা শুরু হবে। পরে দেবীর পায়ে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, মহাসপ্তমীর অপরিহার্য দুস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ ও ধর্মীয় অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। এ ছাড়া রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে আজ সপ্তমীর দিন সকালে নয় ধরনের উদ্ভিদ দিয়ে দেবীর প্রতিকৃতি তৈরি করে স্নান করানো হবে; যাকে নবদুর্গা বা কলাবউ স্নান বলে।

বসুন্ধরা পূজামণ্ডপ : বিগত বছরগুলোয় রাজধানীর সনাতন ধর্মশিল্পী, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ও দর্শকদের দৃষ্টি কেড়েছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার দুর্গাপূজা মণ্ডপ। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মণ্ডপ এলাকায় বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ছাড়াও লাল-নীল মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। গাছে গাছে লাগানো হয়েছে লণ্ঠন বাতি। মণ্ডপে প্রবেশের মুখেই প্রধান ফটকের দুই পাশে বসানো হয়েছে দুটি ফোয়ারা। মণ্ডপের প্রবেশপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপর অবস্থান চোখে পড়ে। মণ্ডপের আশপাশে বেশ কয়েকটি স্টলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে প্রসাদ পাওয়া যাচ্ছে। মূল পূজামণ্ডপের বাইরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। আর পুরো মণ্ডপ এলাকায় কলকাতার পূজামণ্ডপের আদলে সনাতন দেব-দেবীদের বিভিন্ন ছবি টাঙানো হয়েছে। পূজা উদ্যাপন কমিটির দেওয়া তথ্যে, মূল পূজামণ্ডপের সাজে সর্বজনীন ভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দর্শকের বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বসুন্ধরা পূজা উদ্যাপন কমিটির সহ-কোষাধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আগের বছরগুলোর মতো এবারও পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত আছে। এই মণ্ডপে একই সঙ্গে তিন হাজার মানুষ পূজা দেখতে পারবেন। প্রতিদিন প্রসাদ হিসেবে দর্শনার্থীদের জন্য খিচুড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর