বগুড়ায় কিশোরী ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর বিচারের নামে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। তদন্তে পুলিশ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। খুব দ্রুতই নারী নির্যাতন ও চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার্জশিট প্রদান করা হচ্ছে। ধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি থাকছেন তুফান সরকার আর অভিযুক্ত থাকছেন তার সহযোগীরা এবং নির্যাতনের পর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি থাকছেন তুফান সরকারের স্ত্রী আশা সরকার ও আশার বোন কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিসহ তাদের মা-বাবা ও নরসুন্দর জীবন। জানা যায়, গত ১৭ জুলাই বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুরের বাসিন্দা বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের বহিষ্কৃত নেতা তুফান সরকার কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে ছাত্রীকে নিজ বাসায় ডেকে নেন। সেখানে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে ২৭ জুলাই বিচারের নাম করে তুফান সরকারের স্ত্রী আশা সরকার ও আশার বোন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি, তার বাবা, মা বাড়িতে ডেকে নির্যাতন করেন। নির্যাতন করার একপর্যায়ে কিশোরী ও তার মাকে মারধর ও মাথা ন্যাড়া করে বের করে দেন। এ ঘটনায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই তুফান সরকার ও তার পাঁচ সহযোগীকে এবং পরে আশা, রুমকিসহ মামলার সূত্র ধরে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করে। মামলার বাদী হন ধর্ষিত কিশোরীর মা। তিনি বগুড়া সদর থানায় তুফান সরকারকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাথা ন্যাড়া ও মারপিটের ঘটনায় দুটি মামলা করেন। মা ও মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার অপরাধে নাপিতকে গ্রেফতার করা হলেও তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। প্রধান আসামি তুফান সরকারকে কারাবিধি ভঙ্গের কারণে সম্প্রতি বগুড়া কারাগার থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। অন্য নয় আসামি বগুড়া কারাগারে রয়েছেন। মা ও মেয়ে বর্তমানে নিরাপত্তার কারণে রাজশাহী ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছেন। ধর্ষণ মামলায় তুফান সরকারের সহযোগী শিমুল শুধু পলাতক রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দুটি মামলার চার্জশিট প্রদান করা হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।’