শেরপুরের নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের নির্যাতনে বিশ্বদেব দে (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল উত্তাল ছিল পৌর শহর। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ ঘটনার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে। নিহত যুবক পৌর শহরের কাচারিপাড়া মহল্লার মৃত বিধান চন্দ্র দের সন্তান। জানা গেছে, বিশ্বদেব ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর কাঠমিস্ত্রির কাজ করে মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন। জীবিকার তাগিদে তিনি ঢাকায় কাজ করতেন। পূজার ছুটিতে ঢাকা থেকে মায়ের কাছে আসেন। এ অবস্থায় রবিবার সন্ধ্যার দিকে পুলিশ তাকে শহরের তারাগঞ্জ উত্তর বাজার এলাকা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভগ্নিপতির মুচলেকায় থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় বিশ্বদেব জানান, তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে। থানা থেকে বের হওয়ার সময়ই তিনি বমি করতে থাকেন। বাসায় যেতে যেতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে রাত ১টার দিকে তাকে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বিক্ষুব্ধ জনতা নিহতের লাশ ভ্যানে উঠিয়ে ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের তারাগঞ্জ উত্তর বাজার সড়কে টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা উত্তর বাজারের হাবিব কমপ্লেক্সের তিন তলায় সহকারী পুলিশ সুপারের (নালিতাবাড়ী সার্কেল) কার্যালয়ের সাইনবোর্ডসহ মার্কেটের গ্লাস ভাঙচুর করে। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। দুপুরে লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিশ্বদেবের মা জবা রানী দে বিলাপ করে বলেন, ‘আমার ছেলে বিড়ি-সিগারেটও কোনো দিন খায়নি, পুলিশই আমার ছেলের কোমরে গাঁজা দিয়া থানায় নিয়া যায়। পুলিশই পিডাইয়া মাইরা হালাইছে। আমার পুলার হত্যার বিচার চাই।’ এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘নির্যাতনের রিপোর্ট পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’