বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সেই হানিপ্রীত গ্রেফতার

প্রতিদিন ডেস্ক

সেই হানিপ্রীত গ্রেফতার

ভারতে ধর্ষণের দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের পালিতকন্যা হানিপ্রীত ইনসান। মাস খানেক ধরে পুলিশ তাকে খুঁজছে। অবশেষে গতকাল পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। অবশ্য এর আগে তিনি আভাস দিয়েছিলেন মঙ্গলবার (গতকাল) তিনি আত্মসমর্পণ করবেন। কিন্তু তার আগেই  এ দিন তাকে গ্রেফতার করে হরিয়ানা পুলিশ। চণ্ডীগড় জাতীয় সড়কের কাছ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। হরিয়ানার পাঁচকুলার উপ-পুলিশ কমিশনার মানবির সিং জানিয়েছেন তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এদিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আগে সিএনএন নিউজ ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হানিপ্রীত বাবা রাম রহিমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রত্যাখ্যান করেন। সাক্ষাৎকারে হানিপ্রীত বলেন, ‘যা কিছু বলা হচ্ছে তা মিথ্যা, একজন বাবা কি তার হাত মেয়ের মাথায় রাখতে পারেন না? মানুষের অনুভূতির কি মৃত্যু হয়েছে? বাবা-মেয়ের সম্পর্ক কি পবিত্র না? তারা এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে কী পাচ্ছে?’ রাম রহিমের মুক্তির জন্য হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন বলে জানান হানিপ্রীত। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আমার বাবা নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।’ গত ২৫ আগস্ট পাঁচকুলাস্থ সিবিআইয়ের বিশেষ একটি আদালত দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের মামলায় রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপরই রামের সমর্থকরা হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দিল্লির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা চালায়। এসব সহিংসতায় কেবল হরিয়ানার পাঁচকুলাতেই ৩৬ জন নিহত হন। আর সিরসা যেখানে রামের ডেরা সাচা সৌদা আশ্রমের সদর দফতর সেখানে আরও পাঁচজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে নিরাপত্তাবাহিনীর পাঁচ সদস্যও রয়েছেন। সহিসংতার এসব ঘটনায় উস্কানির অভিযোগে হানিপ্রীত ওরফে প্রিয়াঙ্কা তানেজা, আশ্রমের মুখপাত্র আদিত্য ইনসানসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে পাঁচকুলা পুলিশ। সহিংসতা ও দেশদ্রোহিতার এক মামলায় সম্প্রতি পাঁচকুলা পুলিশ হানিপ্রীতের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এরপরই আগাম জামিন (ট্রানজিট এনটিসিপেটরি বেইল) পেতে গত সপ্তাহে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে আদালত এ আবেদন খারিজ করে দেয়। এ অবস্থায় গতকাল মোহালি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন হানিপ্রীত।  মামলার পরপরই হানিপ্রীত পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে খবর রটেছিল। আত্মসমর্পণের পর স্থানীয় টিভি চ্যানেলে দেওয়া বক্তব্যে একথা নাকচ করে দিয়েছেন তিনি। হানিপ্রীত বলেন, ‘আমি ভারতেই ছিলাম। নেপালে যাইনি।’ সেইসঙ্গে হানিপ্রীত নিজেকে নির্দোষ ও দেশপ্রেমিক দাবি করেছেন। সত্যের জয় হবে এবং একদিন তা বিশ্ব জানতে পাবে বলেও জানান তিনি। হানিপ্রীতের ভাষায়, ‘সত্যের জয় হবে এবং বিশ্ব তা দেখবে। বিশ্ব কীভাবে আমাদের প্রতি এমন অন্যায় আচরণ করতে পারে তা ভেবে আমি ব্যথিত ও স্তম্ভিত। আমরা মহান দেশপ্রেমিক এবং ভারতকে ভালোবাসি।’ অবশ্য গত সপ্তাহে নর্থ দিল্লির একটি রাস্তায় হানিপ্রীতের মতো দেখতে এক নারীকে ব্যতিব্যস্তভাবে চলাফেরা করার দৃশ্য সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছিল। শহরটির এক আইনজীবীর বাড়ির কাছের সিসিটিভিতে এ দৃশ্য ধরা পড়েছিল যা আইনজীবীর এক প্রতিবেশি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। ওই আইনজীবী দাবি করেছিলেন, হানিপ্রীত আইনি সহায়তার জন্য তার কাছে গিয়েছিলেন। এ খবর বের হওয়ার পরপরই হরিয়ানা পুলিশ হানিপ্রীতকে ধরতে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে দিল্লিতে আসে। তারা দিল্লির একটি বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছিল তবে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। এনডিটিভি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর