বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
বরিশালে তোলপাড়

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতাদের বন্দুক তাক করা ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতাদের বন্দুক তাক করা ছবি

বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা প্রসেনজিৎ দাস অপু ও কাওসার মাহমুদ মুন্না ১ অক্টোবর রাতে বন্দুক হাতে নিশানা তাক করে নিজেদের আলাদা আলাদা যে ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন তা নিয়ে বরিশালে তোলপাড় চলছে। পুলিশ বলছে তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

অপু ও মুন্না তাদের আপলোড করা ছবির ওপরে ‘বন্দুক দিয়ে টার্গেট প্র্যাকটিস করি, বন্দুকের নিশানা এবার তুই’ লিখে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। মুন্নার ওয়াল থেকে পোস্ট করে অপুকে ট্যাগ করা হয়। ছবিটি ভাইরাল হয়ে গেলে চারদিকে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। গতকাল পর্যন্ত সামাজিক, রাজনৈতিক অঙ্গন ও ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলে।

অপু ও মুন্না বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হবেনই— এরকম একটি প্রচার চালু রয়েছে। বাবুগঞ্জ ছাত্রদল ও ছাত্রমৈত্রীর একাধিক নেতা বলেন, ‘অপু-মুন্না পদ পাওয়ার আগেই যদি এরকম আস্ফাালন করতে থাকেন, পদ পেলে তো তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবেন।’ বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান মিলন মৃধা বলেন, ‘অপু ও মুন্না এমন সব নেতার পাশে থাকেন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা কঠিন। তারা যে মন্তব্য করেছেন তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’ উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি সোহেল আহমেদ নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসী বিভিন্ন পন্থায় দলে অনুপ্রবেশ করছে। এদের ব্যাপারে এখনই সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে এরা আওয়ামী লীগের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হেমায়েতউদ্দিন সুমন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর কিংবা আপত্তিকর কোনো মন্তব্য কেউ করে থাকলে তারা নতুন কমিটিতে ঠাঁই পাবেন না।’ এদিকে, প্রসেনজিৎ দাস অপু বলেন, বন্দুক নয়, তিনি বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা পার্কে এয়ারগান দিয়ে বেলুন ফুটাচ্ছিলেন। মুন্না সেই ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়ে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছেন। ওই ছবিটি আপলোড করা কিংবা ছবির সঙ্গে ওই ধরনের মন্তব্য করা উচিত হয়নি। তিনি বলেন, ওই পোস্টটি ডিলিট করা হয়েছে। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম (অব.) বলেন, ‘যারা বন্দুক হাতে নিয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলে সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড করেছে, তারা ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবিতে নেই। ছাত্রলীগ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এ ধরনের বিকৃত রুচির কেউ যাতে ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে স্থান না পায় সে বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক জাহিদ ফারুক শামীম। বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন বলেন, ‘জেলা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে আসলে কী ঘটেছে। তদন্তে কেউ অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর