ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ৮ ঘণ্টার ব্যবধানে ইলিশে সয়লাব বরিশালের পোর্ট রোড ইলিশ মোকাম। ২২ দিনের নীরবতা ভেঙে মত্স্য আড়তদার, পাইকার, মত্স্যজীবী এবং ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর ইলিশ মোকাম। নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিন গতকাল প্রায় ৪ হাজার মণ ইলিশ এসেছে বরিশালের মোকামে। এ কারণে কমেছে দামও। ইলিশের সরবরাহ বেশি এবং দাম কম হওয়ায় খুশি ক্রেতা বিক্রেতা সবাই। তবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ইলিশ সরবরাহ হওয়ায় হঠাৎ বরফ সংকটে পড়েছে মত্স্য ব্যবসায়ীরা। কয়েকদিনে ইলিশের সরবরাহ আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা মত্স্য বিভাগের। নিষেধাজ্ঞা ছাড়া সারা বছরই পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে কম-বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। কিন্তু গতকাল একদিনে যে পরিমাণ ইলিশ এসেছে, এতে অবাক সংশ্লিষ্টরা। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ইলিশ আসায় কমেছে দামও।
গতকাল বরিশাল মোকামে এক কেজির বড় সাইজের প্রতিমণ ইলিশ পাইকরি বিক্রি হয়েছে ৬০ হাজার টাকা, কেজি সাইজের প্রতিমণ ৩৮ থেকে ৪০ হাজার, রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০-৯০০ গ্রাম) প্রতিমণ ২০ থেকে ২২ হাজার, মাঝারি সাইজ (ভ্যালকা) প্রতিমণ ১৫ থেকে ১৬ হাজার, গোটলা (৩০০-৪০০ গ্রাম) ১৩ থেকে ১৪ হাজার এবং জাটকা প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
সাধারণ সময়ে পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে ইলিশ বেচা-কেনা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু গতকাল বিকাল ৩টায়ও নৌকা-ট্রলার বোঝাই ইলিশ নিয়ে আসতে দেখা গেছে মত্স্যজীবীদের। সব ইলিশের পেটেই দেখা গেছে ডিম। এ কারণে নিষেধাজ্ঞার সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। ইলিশের সরবরাহ বেশি এবং দাম কম হওয়ায় পাইকাররা ইলিশ পাঠাচ্ছে ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। আবার কেউ নিজের আড়তে বিক্রির জন্য কিনছেন ইলিশ। সব মিলিয়ে পোর্ট রোড আড়তে গতকাল ছিল উৎসবের আমেজ। কেউ কেউ ‘ইলিশ উৎসব’ বলে অভিহিত করেছেন। বরিশাল জেলা মত্স্য বিভাগের কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ দাস বলেন, ইলিশ সারা বছরই ডিম ছাড়ে। কিন্তু আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে-পরে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। আগামী কয়েক দিনে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়বে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।