বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ

আদালত প্রতিবেদক

মুদ্রা পাচারের পাঁচ মামলায় আপন জুয়েলার্সের তিন মালিককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। এরা হলেন দিলদার আহমেদ সেলিম, গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ। গতকাল আসামিরা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের আইনজীবী কাজী মো. নজিবউল্লাহ হীরু ও মো. ওমর ফারুক জামিনের আবেদন করেন।

জামিন শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, দরখাস্তকারী আসামিরা কত টাকা কখন কোথায় কীভাবে পাচার করেছেন সে বিষয়ে মামলায় কিছুই উল্লেখ নেই। এ ছাড়া মুদ্রা পাচারের এ মামলায় টাকার পরিমাণ, ঘটনার স্থান এবং সেই টাকা কোন দেশ থেকে কোন দেশে পাচার করা হয়ে সে বিষয়ে কিছুই বলা নেই। শুধু চলমান পারিপার্শ্বিকতার শিকার এই আসামিরা। আসামিদের পারিবারিক একটি সমস্যার কারণে একটি মহল তাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আসামিরা অসুস্থ। তাদের জামিন দেওয়া হোক। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসান, নূরুন্নাহার ইয়াসমিন ও দেবব্রত বিশ্বাস রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা, রমনা থানা ও ধানমন্ডি থানায় করা পৃথক তিন মামলায় আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব গুলশান থানার দুই মামলায় শুনানি শেষে আপন জুয়েলার্সের মালিক গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জানা গেছে, রাজধানীর বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের বাবা আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম। ওই ঘটনায় করা মামলার পর আপন জুয়েলার্সের নাম সামনে আসে। এ মামলা চাপা দিতে বিপুল অর্থ খরচের চেষ্টার অভিযোগ উঠলে অর্থের উৎস ডার্টি মানি কি না অথবা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম অস্বচ্ছ কি না তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। পরে আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কয়ার ও মৌচাকের পাঁচটি শোরুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণালঙ্কার ও ৪২৭ গ্রাম হীরা জব্দ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। ওই সব স্বর্ণালঙ্কারের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে আপন জুয়েলার্সের মালিকদের ডাকা হয়। পরে তারা বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় ওই সোনা ও হীরা বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তর করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। পরে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম এবং তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদের বিরুদ্ধে ১২ আগস্ট পাঁচটি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। এর মধ্যে রাজধানীর গুলশান থানায় দুটি, ধানমন্ডি থানায় একটি, রমনা থানায় একটি এবং উত্তরা থানায় মুদ্রা পাচার আইনে একটি মামলা করা হয়। পরে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম এবং তার দুই ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদকে ২২ আগস্ট হাই কোর্ট চার সপ্তাহের জামিন দেয়। কিন্তু হাই কোর্টের সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আসামিরা বিচারিক আদালতে আর হাজির হননি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে মালামাল জব্দের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২৫ জুলাই হাই কোর্টে পাঁচটি রিট আবেদন করেছিলেন দিলদার ও তার দুই ভাই।

সর্বশেষ খবর