বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট ভোগান্তি

প্রতিদিন ডেস্ক

কাঞ্চন সেতু মেরামতের কারণে ঢাকা বাইপাস বন্ধ থাকায় এবং দুর্ঘটনায় কয়েকটি গাড়ি বিকল হওয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক এবং টঙ্গী-পাঁচদোনা সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। খবর বিডিনিউজ।

মঙ্গলবার ভোররাত থেকে এই যানজটের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদীর কান্দাইল থেকে পাঁচদোনা মোড় পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এবং টঙ্গী-পাঁচদোনা সড়কের পাঁচদোনা থেকে ঘোড়াশাল হয়ে গাজীপুরের মিরেরবাজার পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়ক স্থবির হয়ে আছে।

গতকাল দুপুরে কান্দাইল বাসস্ট্যান্ড থেকে পাঁচদোনা মোড় হয়ে ঘোড়াশাল পর্যন্ত দেখা গেছে যানজটের ভয়াবহ চিত্র।

মেরামতকাজের জন্য ২০ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা বাইপাস সড়কের কাঞ্চন সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকে। ২৩ তারিখ সীমিত আকারে যান চলাচল শুরু হলেও ভারী যানবাহন এখনো ওই সেতু দিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। চালকদের আপাতত টঙ্গী-ঘোড়াশাল-পাঁচদোনা সড়ক ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ব্যবহার করার নির্দেশনা দিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। এ কারণে চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুর এবং উত্তরবঙ্গগামী যানবাহনের চাপ বেড়েছে সিলেট মহাসড়ক এবং টঙ্গী-পাঁচদোনা সড়কে। কিন্তু এ সড়কেও উন্নয়নকাজ চলায় ভাটপাড়া এলাকায় মোটামুটি ১০০ মিটার এলাকায় সড়কের এক লেন বন্ধ রয়েছে। সড়কের ওই অংশে দুই মুখী যানবাহন এক লেন দিয়ে চলার কারণে যানবাহন আটকে জট দীর্ঘ হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যে গতকাল ভোরে ভাটপাড়ায় একটি কাভার্ড ভ্যান বিকল হলে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ে। এ ছাড়া সিলেট মহাসড়কের ভগীরথপুরে পাকিজা স্পিনিং মিলের সামনে সকাল সাড়ে ৬টায় সিলেটগামী মিতালি পরিবহনের সঙ্গে একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ফলে দুই দিক থেকে যান চলাচল কিছু সময় বন্ধ থাকে। পাঁচদোনা থেকে ঘোড়াশাল পর্যন্ত কয়েকটি জায়গায় উন্নয়নকাজের জন্য সড়কের অর্ধেক অংশ খুঁড়ে রাখা হয়েছে। যানবাহন চলছে এক পাশ দিয়ে। আবার যে পাশ দিয়ে যানবাহন চলছে, সেখানেও সড়কের বিভিন্ন অংশ দেবে গেছে। ভোরে দেবে যাওয়া অংশেই কাভার্ড ভ্যান আটকে যানজট তৈরি হয়েছিল। এ ছাড়া সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত থাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। সকালে সিলেট মহাসড়কের পাঁচদোনায় কথা হয় দিনাজপুর থেকে সিলেটগামী একটি ট্রাকের চালক পারভেজ রানার সঙ্গে। তিনি জানান, জট দেখে মিরেরবাজার থেকে ঘুরে ঢাকা হয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এর পরও যানজট এড়াতে পারেননি। ‘সোমবার রাইতে মিরেরবাজার আসছি। জ্যাম দেইখা ট্রাক ঘুরাইয়া বাড্ডা, রামপুরা হইয়া ডেমরা দিয়া এই দিকে আসছি। কিন্তু আজ (গতকাল) সকাল সাড়ে ৫টার সময় মাধবদী আইসা আবার জ্যামে পড়ছি। এই তিন কিলোমিটার রাস্তায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধইরা আইটকা আছি।’ ঘোড়াশালে কাভার্ড ভ্যান চালক বশির উদ্দিন জানান, কক্সবাজার থেকে এসে (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় মাধবদীর আগে যানজটে পড়েন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তিনি পাঁচদোনা মোড়ে পৌঁছাতে পেরেছেন। চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরগামী গার্মেন্ট পণ্যের একটি ট্রাকের চালক আসলাম জানান, বাইপাস সড়ক বন্ধ থাকায় এ সড়কে এসে যানজটে আটকে গেছেন তিনি। বাইপাস সড়কে তো সব সময় যানজট লাগে। রাতেও মদনপুর থেকে গাউসিয়ার পথে কিছুটা যানজট ছিল। কিন্তু মাধবদী আসার পর গাড়ি আর এগোয় না। এখানেই পাক্কা তিন ঘণ্টা। যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন দূরপাল্লার বাসের যাত্রীরাও। ইউনিক পরিবহনের যাত্রী পলাশ দাম বলেন, ‘অফিসের কাজে আমাকে সিলেট যেতে হচ্ছে। কিন্তু সময়মতো পৌঁছাতে পারছি না। দুপুরের আগে সিলেট পৌঁছানো দরকার ছিল। অথচ এখানেই বসে আছি প্রায় দুই ঘণ্টা। এই জ্যাম কখন ছাড়ে আর কখন পৌঁছাব কিছুই বুঝতে পারছি না।’ গাজীপুর জেলা হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আহম্মেদ বলেন, রাস্তা কাটার কারণে এক লাইন করে গাড়ি ছাড়ছে। এ কারণে যানবাহনের জট লেগে গেছে। তিনি জানান, জেলা পুলিশের সদস্যদের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের ছয়জন এসআই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। রাস্তায় কাজ চলছে। দুই দিক থেকে গাড়ি টানতে পারছে না। এ কারণে এখনো বলা যাচ্ছে না যানজট কখন ছাড়বে। তবে এখন যা পরিস্থিতি তাতে যানবাহন আস্তে আস্তে চলতে পারছে।

সর্বশেষ খবর