শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এবার বিশ্বমানের পথে জাতীয় চিড়িয়াখানা

মোস্তফা কাজল

এবার বিশ্বমানের পথে জাতীয় চিড়িয়াখানা

বদলে যাচ্ছে জাতীয় চিড়িয়াখানা। বিশ্বমানের রূপ পাচ্ছে সরকারি এই চিড়িয়াখানাটি। চূড়ান্ত করা হয়েছে মহাপরিকল্পনা। কয়েক দিন আগে মহাপরিকল্পনাটি মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদিত মহাপরিকল্পনায় মালয়েশিয়ার ‘জু নিগারা’র আদলে ঢেলে সাজানো হবে এই চিড়িয়াখানা। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটকদের রাতযাপনের ব্যবস্থাসহ থাকছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। বাড়ানো হবে সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় পাখিসহ বিভিন্ন ধরনের দুই হাজারের বেশি প্রাণী রয়েছে। নতুন করে অবকাঠামোর উন্নয়ন, প্রাণী ও পাখি সংগ্রহে একটি কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। চলতি অর্থবছরে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পেলে বিশ্বমানের রূপ দেওয়ার কর্মযজ্ঞ শুরু হবে। এ ছাড়া গবেষণার কাজে লাগবে এমন ধরনের কিছু উপকরণ থাকছে এতে। শিগগিরই দেড় শতাধিক প্রাণী ও পাখি কেনার দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে আসছে ১০ আকর্ষণীয় বন্যপ্রাণী। এর মধ্যে রয়েছে তিন জোড়া সিংহ, এক জোড়া ভল্লুক ও এক জোড়া উটপাখি। এসব বন্যপ্রাণী ও পাখি আপাতত প্রাণী বিনিময় কার্যক্রমের আওতায় আনা হচ্ছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থেকে। গতকাল প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক জাতীয় চিড়িয়াখানার প্রস্তুতি দেখে গেছেন। জানতে চাইলে চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মহাপরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ক্যাবল কার, লেজার শো, পানির নিচে ফিশ অ্যাকোরিয়াম, নাইট সাফারি ট্যুর, লেক সাফারি, ফরেস্ট লজ, ওয়াচ টাওয়ার, সুসজ্জিত ফুলের বাগান ও প্রজাপতি পার্ক। পাশাপাশি আগত দর্শকদের জন্য রেস্ট হাউস, উন্নতমানের খাবার হোটেলও নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া দরপত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার থেকে দেড় শতাধিক প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১৬ প্রজাতির ১১৪টি দুষ্প্রাপ্য প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে শিম্পাঞ্জি, আফ্রিকান সিংহ, সাদা সিংহ, চিতাবাঘ, চিত্রা হায়েনা, সাদা পেলিকান পাখি, সালফার ক্রেস্টেড কাকাতুয়া, সারস, কেশোয়ারী পাখি সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। কোন কোন দেশ থেকে এসব প্রাণী ও পাখি আসবে তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিক করবে। এ ছাড়া নতুন আসা ঘড়িয়াল দম্পতি সবকিছু মানিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকায় ১৩ প্রজাতির ২০০ প্রাণী ও পাখি সংগ্রহ করা হবে বলে জানান কিউরেটর। ভোদড়, গোখরা সাপ, লাউডগা লাপ, দাঁড়াশ সাপ, সোনালি সাপ, লালমুনিয়া পাখি, হোয়াইট পিঙ্ক কবুতর, আঁচিল মুরগি, ময়না, হলুদ টিয়া, তিতির কেনা হবে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে। কিউরেটর আরও বলেন, সঙ্গী মারা যাওয়ায় যেসব প্রাণী একা হয়ে গেছে নতুন প্রাণী আসার পর সেগুলো জুটি খুঁজে পাবে। প্রাণী সংগ্রহের ইচ্ছা থাকলেও সে অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়ার অনুযোগও জানান চিড়িয়াখানার এই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, এর আগে ২০১২ সালে ১০ কোটি টাকায় প্রাণী কেনার উদ্যোগ নেওয়া হলেও বরাদ্দ মিলেছিল সাড়ে ৭ কোটি টাকা। ওই টাকা দিয়ে ২৭০টি প্রাণী সংগ্রহের কথা থাকলেও সাড়ে ৫ কোটি টাকায় ৩০ প্রজাতির ২৩০টি প্রাণী সংগ্রহ করা হয়। এরপর মন্ত্রণালয়ে ফেরত যায় ২ কোটি টাকা। জাতীয় চিড়িয়াখানার এস্টেট অফিসার ডা. অসীম কুমার দাস বলেন, চিড়িয়াখানার জমি থেকে অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হয়েছে। জাদুঘরের ওপরের সভাকক্ষটি জাপানের আর্থিক সহযোগিতায় আধুনিকায়ন করা হয়েছে। কিছু প্রকোষ্ঠের সংস্কার ও মেরামত করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর