বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নৌকা ডুবে পরীক্ষা দেওয়া হলো না ওদের

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পাগলা নদীতে গতকাল নৌকা ডুবে দুই জেএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বড় আশা ছিল তাদের জেএসসি পরীক্ষা দেওয়ার। কিন্তু তাদের লাশ হয়ে ফিরতে হলো বাড়িতে। জানা যায়, সকালে  বীরগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৪০ পরীক্ষার্থী অভিভাবকসহ কমপক্ষে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা থানাকান্দি গ্রাম থেকে কৃষ্ণনগর আবদুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। কৃষ্ণনগর এলাকায় ব্রিজের কাছে নদীতে পোঁতা একটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে নৌকাটি কাত হয়ে ডুবে যায়। এ সময় নৌকায় থাকা অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়। কিন্তু বীরগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আমতলী গ্রামের সৈয়দ হোসেনের কন্যা নাদিরা আক্তার (১৩) ও নজরদৌলত গ্রামের ইকবাল হোসেনের শিশুকন্যা শান্তা বেগমকে (১৪) গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আজহার রহমান তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে ইশরাত আক্তার (১৪) ও আকলিমা আক্তারকে (১৩) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। স্থানীয় লোকজন অন্য শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ চালায়।

বীরগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজির হোসেন জানান, ওই দুই ছাত্রী আমার স্কুলে নম্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছিল। তাদের মৃত্যুতে অন্য ছাত্রছাত্রীরা ভেঙে পড়েছে। তাত্ক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল খালেক, জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামছুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিত্তরঞ্জন পাল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালেহীন তানভীর গাজী, নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম শিকদার। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। ঘটনার পর এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালেহীন তানভীর গাজী বলেন, বাকি পরীক্ষার্থীরা সুস্থ রয়েছে এবং স্কুলে মেডিকেল টিম নিয়োজিত আছে।

কুমিল্লা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল খালেক বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতেই এসেছি। যেহেতু তারা কুমিল্লা বোর্ডের ছাত্রী। যে ছাত্রী আহত হওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি, সে যদি বাকি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে তাহলে নিয়মানুযায়ী যে পরীক্ষা দিতে পারেনি সেটি আগামীতে দেবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর জানান, এ ঘটনায় তিন  সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর