শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভারতীয় প্রকৌশল পণ্যের জমজমাট প্রদর্শনী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতীয় প্রকৌশল পণ্যের জমজমাট প্রদর্শনী

ভারতীয় প্রকৌশল পণ্যের প্রদর্শনী জমেছে রাজধানীর কুড়িলসংলগ্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)। ভারতের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের শীর্ষ শতাধিক প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী ‘ইন্ডি বাংলাদেশ’ নামের এ প্রদর্শনীর সমাপনী আজ বিকালে। প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এখানে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে আগামীতে দ্রুত শিল্পের প্রসার ঘটতে পারে। তাতে হালকা থেকে ভারী প্রকৌশল পণ্যের চাহিদাও বাড়বে। বাংলাদেশের এই চাহিদা মেটাতে আগ্রহী ভারতীয় প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানগুলো। আইসিসিবির ২ ও ৪ নম্বর হলে বৃহস্পতিবার এ প্রদর্শনী শুরু হয়। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সহযোগিতা নিয়ে ‘ইন্ডি বাংলাদেশ-২০১৭’ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ভারতের বাণিজ্য উন্নয়ন সংস্থা ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল (ইইপিসি) ও দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ভারত বিশ্বের পাঁচটি মহাদেশের ২৬টি দেশে এমন ৩৬টি সফল প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩৭তম প্রদর্শনী হলো প্রতিবেশী বাংলাদেশে। গতকাল প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের স্টলগুলোয় ছোট ছোট যন্ত্রাশং পণ্যের পসরা সাজিয়ে দর্শনার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেছে। আর বড় বড় প্রকৌশল পণ্যের ক্যাটালগ প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (পেট্রোকেমিক্যালস রপ্তানি) মনোজ কুমার ঝা গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখন বাংলাদেশে অনেক সম্ভাবনা আছে পেট্রোকেমিক্যালসের। আর ইন্ডিয়ান অয়েল শুধু ভারতের সর্ববৃহৎ কোম্পানিই নয়, বিশ্বেও আমাদের যথেষ্ট সুনাম আছে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের বাজারে আমাদের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে।’ ভারতের রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রিতেস লিমিটেডও এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং ও করপোরেট কমিউনিকেশন্সের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক মাধু মুলচান্দানি গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা এ প্রদর্শনীতে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অংশ নিয়েছি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের একাধিক বাণিজ্য হয়েছে। এখানে ১২০টি রেল কোচ সরবরাহ করেছি। বাংলাদেশি রেলওয়ে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছি। বাংলাদেশ রেলপথ আরও সম্প্রসারণ করছে। ফলে আগামীতে আরও সম্ভাবনা আছে। আমরা সেই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চাই। ইতিমধ্যে আমরা বিশ্বের ৬০টি দেশে রেলসেবা দিয়েছি।’ ভারতের বেসরকারি খাতে প্লাস্টিকশিল্পের অন্যতম প্রতিষ্ঠান দুরা গ্রুপও এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি ব্যবস্থাপক জিমিথ সাহা গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করছে। এ শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনাও আছে এখানে। এখানকার উদ্যোক্তারা অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ছেন। তারা প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কাঁচামাল বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করছেন। আমাদের প্রতিষ্ঠান বিশ্বের অন্যতম পিপি দানা তৈরি করছে; যা বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা আমদানি করতে পারেন। তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চাই।’ আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ প্রদর্শনীতে ভারতীয় অটোমোবাইল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, ইলেকট্রিক মেশিনারি ও যন্ত্রপাতি, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিনারিজ, টেলিযোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি ও তথ্য-প্রযুক্তি সেবা, মেডিকেল ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি প্রদর্শিত হচ্ছে। কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট অটোমোবাইল ও পাওয়ার টিলার নিয়ে এসেছে ভারতের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান টাটা মোটরস। আছে হকিনসের মতো গৃহস্থালি পণ্য উৎপাদনের প্রতিষ্ঠান। এসব পণ্যের বাজারজাতসহ কারখানা স্থাপনের প্রযুক্তিও স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে।

সর্বশেষ খবর