শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আলেকজান্ডার, রানী ও সোফিয়া হলো চিড়িয়াখানার বাসিন্দা

উটপাখি তৃণভোজী। সবুজ ঘাস ও কচি শাকসবজি এদের প্রধান খাদ্য। আড়াই বছর হলেই এ পাখি গর্ভধারণ করে। শিশুরাই উটপাখির সবচেয়ে বেশি ভক্ত। এ পাখির বসবাস সাধারণত মরু অঞ্চলে

মোস্তফা কাজল

আলেকজান্ডার, রানী ও সোফিয়া হলো চিড়িয়াখানার বাসিন্দা

ভারতের রাজস্থান থেকে আনা তিন উটপাখি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানার বাসিন্দা হলো বিশালদেহী পাখি পরিবারের সদস্য আলেকজান্ডার, সোফিয়া ও রানী নামের তিন উটপাখি। এদের মধ্যে একটি পুরুষ ও অন্য দু-টি স্ত্রী প্রজাতির। এ পাখির বসবাস সাধারণত মরু অঞ্চলে। গতকাল ভোরে ভারতের রাজস্থান থেকে আকাশপথে এ তিন উটপাখি আনা হয়। আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এ তিন উটপাখি সাড়ে চার লাখ টাকায় কেনা হয়। ফ্যালকন ট্রেডার্স নামের একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান পাখিগুলো ভারত থেকে আমদানি করেছে। উটপাখি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পাখি। কিন্তু উড়তে পারে না।

এই পাখির গড় আয়ুষ্কাল ২০ থেকে ২৫ বছর। কিন্তু আবদ্ধ অবস্থায় খাঁচায় বা বেষ্টনীতে ১৬ থেকে ১৮ বছর বেঁচে থাকে। চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, উটপাখির আগমনে চিড়িয়াখানার পাখির ভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ হলো। বিশেষ করে শিশু ও কিশোরদের কাছে এ পাখির চাহিদা অনেক বেশি। জু অফিসার বলেন, উটপাখি তৃণভোজী। সবুজ ঘাস ও কচি শাকসবজি এদের প্রধান খাদ্য। আড়াই বছর হলেই এ পাখি গর্ভধারণ করে। শিশুরাই উটপাখির সবচেয়ে বেশি ভক্ত। সব মিলিয়ে উটপাখিকে ঐতিহ্য বলে মনে করছে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। গতকাল চিড়িয়াখানায় সরেজমিন দেখা গেছে, নতুন এই তিন অতিথি নির্দিষ্ট বেষ্টনীর মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরিচর্যাকারী আবুল কালাম সেখানে গিয়ে শস্য দানা, কচি ঘাস ও গমের ভুসি খাবার খেতে দেয়। খাবার খেয়ে বেষ্টনীর ভিতরের চারপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বেষ্টনীর ভিতরের মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি খায়। এসব দেখে বেশ আনন্দ পায় চিড়িয়াখানায় আসা অগণিত দর্শক। চিড়িয়াখানার প্রাণী পুষ্টি কর্মকর্তা আবু সাঈদ কামাল বাচ্চু বলেন, নতুন অতিথিদের দেখভাল করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া এ পাখি যাতে সহজেই খাপখাইয়ে নিতে পারে সেজন্য বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এ পাখি একসঙ্গে ৪০ থেকে ৫০টি ডিম পারে। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে ৪০ থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। ডিম তা দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ ও স্ত্রী সমানভাবে দায়িত্ব পালন করে।

 দিনে পুরুষ ও রাতে স্ত্রী তা দিয়ে থাকে। এ পাখি ভারত ছাড়াও আফ্রিকার সুদান, উগান্ডা কেনিয়া ও সাহারা ভূমির দক্ষিণ সমতল ভূমিতে এদের আবাসস্থল। উটপাখি পাখির শ্রেণিভুক্ত। এ পাখির উচ্চতা ২ থেকে আড়াই মিটার হয়ে থাকে। এ ছাড়া পুরুষ উটপাখির গলা ও পা ছাড়া সারা শরীর কালো পালকে আবৃত। আর স্ত্রী উটপাখির পালকের রং বাদামি হয়। এ পাখি সব সময় জোড়ায় জোড়ায় বসবাস করে। খাদ্যের সন্ধানে বহুদূর পর্যন্ত যায় এ পাখি। প্রাপ্ত বয়স্ক উটপাখির লম্বা গলা, পা লালচে ও বাদামি হয়। উটপাখি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে।

সর্বশেষ খবর