শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস রেলসেতু

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দ্বিতীয় ভৈরব ও তিতাস রেলসেতু

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের আন্তর্জাতিক মানের দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু। এ সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। ৯ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতু দুটি উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজগুলো। এ দুটি সেতু চালু হলে ট্রেন চলাচলে আরও ১০-১৫ মিনিট সময় কমে আসবে। একইভাবে ডাবল লাইনে ক্রসিং ছাড়াই ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের সময় এবং যাত্রী হয়রানি ও ভোগান্তি কমবে। আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত এই দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে। এ নিয়ে ট্রেন ভ্রমণকারীদের সময় কমানোর পাশাপাশি সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে আরও একধাপ। রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন বলেই দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু নির্মিত হচ্ছে। আগামী ৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, এ সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল ভ্রমণ হবে আরামদায়ক ও সহজ-সাশ্রয়ী এবং পণ্য পরিবহনে বাঁচবে সময়। ফলে রেলপথে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে জানান তিনি। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ও প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী মো. আবদুল হাই বলেন, দ্বিতীয় ভৈরব রেলসেতু ও দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু চালু হলে ঢাকা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ডবল লাইনে উন্নীত হবে। আজ এ সেতু দিয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও সেতু দুটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে টঙ্গী থেকে ভৈরব বাজার স্টেশন পর্যন্ত ডাবল রেললাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ডাবল লাইন চালুর ফলে এখন প্রতিদিন আন্তনগরসহ ৮৪টি ট্রেন চলাচল করছে। রেলওয়ে সূত্র জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালীসহ পূর্বাঞ্চলীয় জোনে সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৩৭ সালে মেঘনা নদীতে প্রথম সেতু নির্মিত হয়। দীর্ঘ ৮০ বছর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ডাবল লাইন নির্মাণের সুফল তুলতে দ্বিতীয় ভৈরব সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুরাতন ও নতুন দুটি সেতু দিয়েই ট্রেন চলাচল করবে। একটি দিয়ে ডাউন ট্রেন, অন্যটিতে আপ ট্রেন চলাচল করবে। সেতুগুলো যাতে ডুয়েল গেজ হিসেবে ব্যবহার করা যায় এজন্য সেতুর ওপর ডুয়েল রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। রেলওয়ে অ্যাপ্রোচসহ দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদিত হয় ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর। ১২টি পিলার ও ৯টি স্প্যানবিশিষ্ট ৯৮৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭ মিটার প্রস্থের ভৈরব সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ২০১৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন-এফকন জেভির সঙ্গে ভৈরব সেতু নির্মাণে চুক্তি হয়। প্রথম দফায় গত বছর ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় ধাপে মেয়াদ বাড়িয়ে তা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। একইভাবে ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তিতাস সেতু নির্মাণের চুক্তি হয় ঠিকাদার গ্যানন-এফএলসিএলের সঙ্গে। ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে তিতাস সেতুটি। সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক নির্মাণাধীন সেতু দুটি পরিদর্শন করেন।

সর্বশেষ খবর