রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রংপুর সিটি ভোট ইসির প্রথম পরীক্ষা

গোলাম রাব্বানী

রংপুর সিটি ভোট ইসির প্রথম পরীক্ষা

আজ রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই তফসিল ঘোষণা করা হবে। ভোট গ্রহণ হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর। নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ অনেকেই মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। আগে থেকেই প্রচার-প্রচারণাও করেছেন তারা। তবে ঘোষণা অনুযায়ী যারা তফসিলের আগে নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী অপসারণ করেননি তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবে কমিশন। জরিমানাও করা হতে পারে প্রার্থীদের। এদিকে রাজনৈতিক দলের সংলাপের পর রংপুর সিটিতে প্রথম ভোট করতে যাচ্ছে ইসি। সংলাপের পরের এই নির্বাচনকে বর্তমান কমিশনের জন্য প্রথম পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলেছেন, সংলাপে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের প্রস্তাব এসেছে। এ ছাড়া সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ ভোট করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কমিশন। তাই রংপুরের নির্বাচন সুষ্ঠু করে ইসি তার সক্ষমতা প্রমাণ করতে চায়। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, রংপুর সিটিতে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ দেওয়া হবে। নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা এবং একটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রংপুর সিটি নির্বাচনের বিষয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আজ তফসিল ঘোষণা হবে। ২১ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ। এই ভোটে ইসি আইনের কঠোর প্রয়োগ করবে। অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ও একটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা ঘোষণা করেছিলাম প্রার্থীরা নিজ দায়িত্বে প্রচারসামগ্রী অপসারণ করবেন। কিন্তু কেউ তা না করে থাকলে, তফসিল ঘোষণার পরে অ্যাকশন নেওয়া হবে।’ নির্বাচন সুষ্ঠু করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের যেসব আইন আছে তা কঠোরভাবে প্রয়োগ করার মধ্যমে নির্বাচনকে সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করা হবে।’ এর আগে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, রংপরসহ ছয় সিটি নির্বাচন বর্তমান ইসির জন্য টেস্ট কেস। এসব নির্বাচন সুন্দর করার মধ্য দিয়ে জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন্ন সব সিটি নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থককে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে না। ভোট সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচনী আইনের সঠিক ব্যবহার করা হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি বা বিরোধী দল কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের তত্ত্বাবধানে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন। দলীয় প্রতীকেই এ ভোটে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়া যাবে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নিয়ে পাঁচ দিনের মাথায় কুমিল্লা সিটির ভোটের তফসিল ঘোষণা করেছিল বর্তমান কমিশন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অংশগ্রহণে সেটাই ছিল এই ইসির অধীনে প্রথম নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সব দলের অংশগ্রহণে ভোট করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সংলাপ শেষ করেছে কমিশন। এ অবস্থায় রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ইসির আস্থা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসেবে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চের মধ্যে রংপুরে নির্বাচন শেষ করতে হবে। এই সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৯ এবং নারী ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৬২ জন। পাঁচ বছর আগে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪২ জন। সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্র ১৯৬টি।

সর্বশেষ খবর