রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে চায় না জাপা, প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে চায় না জাপা, প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে জোরে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা শহর থেকে গ্রামগঞ্জ। সভা-সমাবেশসহ গণসংযোগও চলছে নিয়মিত।

স্থানীয়ভাবে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগের অর্ধ ডজনেরও অধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য মাঠে কাজ করছেন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরায় চারটি আসনেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট জয়লাভ করে। এর মধ্যে দুটি আওয়ামী লীগের ও দুটি জাতীয় পার্টি। পরিসংখ্যান বলে, সাতক্ষীরা-২ আসনে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী অত্যন্ত শক্তিশালী। স্বাধীনতার পর চারবার এ আসন থেকে জামায়াত প্রার্থী জয়লাভ করেন। তবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে জামায়াতের ঘাঁটিতে আঘাত আনতে সক্ষম হয়। মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির এম এ জব্বার বিপুল ভোটে সেই নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন বিএনপি ও জামায়াত বর্জন করায় ফাঁকা মাঠে গোল দেয় আওয়ামী লীগ। মীর মোস্তাক আহমেদ রবি আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার তাকে ছাড় দিতে নারাজ জাতীয় পার্টি। মহাজোটগতভাবে সাতক্ষীরা সদরসহ সব কটি আসনই দাবি করছে তারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ আসনে দলটি সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়ন আর বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা কর্মীদের প্রভাবে ত্যাগীরা নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন। মূলত এসব কারণেই আগামী নির্বাচনে দলটির ফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া বিএনপি ও জামায়াত ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করলে মহাজোটের সঙ্গে তাদের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। এ আসনের বর্তমান এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দৈনিক কালের চিত্র সম্পাদক আবু আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ সাহিদ উদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম শওকত হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আ হ ম তারেক উদ্দিন, দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক কাজী এরতেজা হাসান জজ মনোনয়নের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জোর তত্পরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিএনপি থেকে এবার মনোনয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল আলিম, সহসভাপতি আবদুর রউফ, সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুল হাসান ও কামরুল ইসলাম ফারুক। এ ছাড়া সাবেক বস্ত্রমন্ত্রী প্রয়াত মুনসুর আলীর ছেলে জেলা বিএনপির সভাপতি রহমত উল্লাহ পলাশ ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক পিপি ইফতেখার আলীও মাঠে রয়েছেন। তবে জেলা বিএনপির এ দুই সিনিয়র নেতা সদর আসনের বাইরে দেবহাটা-কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর আসন থেকেও মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে আছেন। জামায়াতে ইসলামী এখন পর্যন্ত সরাসরি প্রচারে মাঠে না নামলেও ভিতরে ভিতরে সংগঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন ইসলামী জলসা, ওয়াজ মাহফিল, মসজিদ মিশনসহ নানা কৌশলে তারা তাদের শক্ত অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ আসন থেকে জেলা জামায়াতের আমির মুহাদ্দিস আবদুল খালেকের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নের জন্য কাজ করছেন কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি আবদুল জব্বার, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ আজহার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু। ন্যাপের জেলা সম্পাদক কাজী সাঈদও নির্বাচন করতে আগ্রহী।

সর্বশেষ খবর