রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বনানীতে সমাহিত রহমান বিশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঁচ দফা জানাজা শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাসের লাশ বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। গতকাল বাদ আসর রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে সর্বশেষ জানাজার পর মরহুমের লাশ দাফন করা হয়। এর আগে তার লাশ হিমঘরে রাখা হয়েছিল। বার্ধক্যজনিত জটিলতায় শুক্রবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে মারা যান আবদুর রহমান বিশ্বাস। গতকাল বেলা ২টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কফিন আনা হলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা প্রথমে দলীয় পতাকা দিয়ে তা ঢেকে দেন। পরে দলের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মরহুমের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। নয়াপল্টনে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তৃতীয় দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয় চতুর্থ জানাজা। এর আগে গতকাল সকালে বিমানের একটি ফ্লাইটে আবদুর রহমান বিশ্বাসের কফিন নিয়ে যাওয়া হয় বরিশালে। সেখানে জেলা স্কুলমাঠে প্রথম জানাজা শেষে ঢাকায় এনে নয়াপল্টনে নেওয়া হয় কফিন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মরহুমের জানাজায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার  মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল মান্নান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আহমেদ আজম খান, আবদুল হালিম, নুর মোহাম্মদ খান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ  মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, কাজী আবুল বাশার, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, আনোয়ার হোসেইন, হেলাল খান, রাজীব আহসান, হাফেজ আবদুল মালেক, শাহ নেসারুল হক প্রমুখ অংশ নেন। ২০ দলীয় জোটের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, শামীম সাঈদী, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। জানাজার প্রাক্কালে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী আবদুর রহমান বিশ্বাস জাতীয় সংসদের স্পিকার ছিলেন। সবশেষে তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সততার সঙ্গে। এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সত্যিকার অর্থে একজন সৎ, যোগ্য ও নিষ্ঠাবান নেতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত ও মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আবদুর রহমান বিশ্বাস বিএনপির একজন দিকপাল ছিলেন। একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান এবং আমাদের দক্ষিণ বাংলার একজন অভিভাবক ছিলেন। তিনি সারা জীবন রাজনীতি করেছেন, রাজনীতির বিভিন্ন অঙ্গনে তার অবদান অপরিসীম।’ নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল জানান, বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে আবদুর রহমান বিশ্বাসের জানাজায় সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে। ওই জিলা স্কুল থেকেই মেট্রিকুলেশন পাস করেছিলেন আবদুর রহমান বিশ্বাস। মরহুম রহমান বিশ্বাসের পঞ্চম ছেলে শিবলী বিশ্বাস জানাজায় ইমামতি করেন। এতে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হাজি কে এম শহীদুল্লাহ সহিদ, বিভাগীয় কমিশনার মো. শহীদুজ্জামান, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন দল-মতের কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দলের পক্ষ থেকে মরহুমের কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।

 

সর্বশেষ খবর