রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মহানায়কদের জীবনী নিয়ে নাট্য উৎসব শুরু

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

ইতিহাসের সাত মহানায়ক হলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাউল লালন সাঁই, ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী সূর্যসেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অহিংস আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধী, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও গৌতম বুদ্ধ। এই ৭ মহানায়কের উপাখ্যান অবলম্বনে ‘ইতিহাসের মহানায়কেরা’ শীর্ষক নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে নাটকের দল ইউনিভার্সেল থিয়েটার। সাত দিনব্যাপী এই নাট্যোৎসবে ঢাকার পাঁচটি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি ও চট্টগ্রামের একটিসহ মোট ৭টি নাট্যদলের ৭টি নাটক মঞ্চায়ন হবে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই) এর  বিশ্বকেন্দ্রের সম্মানিত সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। উদ্বোধন পর্ব শেষে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে নাটকের দল পালাকার মঞ্চায়ন করে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’। উৎসবের অন্য নাটকগুলো হলো বাউল লালন সাঁইকে নিয়ে থিয়েটারের ‘বারামখানা’, ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী সূর্যসেনকে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি রেপার্টরির ‘সূর্যসেন’, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লোকনাট্য দলের ‘মুজিব মানেই মুক্তি’, ১৯৪৬ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে মহাত্মা গান্ধীর নোয়াখালী সফর নিয়ে ইউনিভার্সেল থিয়েটারের ‘মহাত্মা’, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে নিয়ে আরণ্যক নাট্যদলের ‘এবং বিদ্যাসাগর’ এবং গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী নাট্য ভাবনার ‘শ্রমণ’। ১০ নভেম্বর শেষ হবে সাত দিনের এই নাট্যোৎসব।

অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ : অক্টোবর বিপ্লবের শতবর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে টিএসসিতে শুরু হয়েছে তিন দিনের সাংস্কৃতিক উৎসব। শোভাযাত্রা, আলোচনা, সংগীত, নাটক, আবৃত্তি, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, আলোকচিত্র, চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন দিয়ে সাজানো হয়েছে এ উৎসব। ৩৩টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন সাংস্কৃতিক পর্ষদ’-এর আয়োজনে গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সড়কদ্বীপে শুরু হয় এই সাংস্কৃতিক উৎসব। উৎসবের উদ্বোধনীতে বক্তৃতা করেন অক্টোবর বিপ্লব শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক ও ইমিরেটাস প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক পর্ষদের আহ্বায়ক হায়দার আনোয়ার খান জুনো।

আলোচনা-পরবর্তী সাংস্কৃতিক পর্বে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নৃত্যশিল্পীরা। অনুষ্ঠানে গণসংগীত পরিবেশন করে সংগীত সংগঠন ‘চারণ’। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বিবর্তন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পী সংস্থা। এতে আবৃত্তি পরিবেশন করে স্বরব্যঞ্জন। নাটক মঞ্চায়ন করে নাটকের দল বটতলা। এর আগে বিকাল ৪টায় উৎসবস্থল টিএসসির স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়।

শেলটেক পদক : শেলটেক পদকে ভূষিত হলেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক রফিকুন নবী (২০১৫), পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত (২০১৬) ও ইমেরিটাস প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (২০১৭)। গতকাল রাজধানীর পান্থপথের শেলটেক টাওয়ারের শেলটেক লাউঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গুণীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এ সময় গুণীদের হাতে পদক ও দুই লাখ টাকার চেক তুলে দেন শেলটেকের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী কুতুবউদ্দিন আহমেদ।

উত্তরাঞ্চলের সাংস্কৃতিক উৎসব : জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলার গুণীজন ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে শুরু হয়েছে সাংস্কৃতিক উৎসব। গতকাল সকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি স্টেডিয়ামে ৩ দিনব্যাপী এ সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবাহান, দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম আবুল কাশেম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এন আই খান, ধরিত্রী বাংলাদেশের সম্পাদক অধ্যাপক ড. হারুন-আর-রশিদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য রেজাউল হাসান প্রমুখ।

কলকাতায় বাংলাদেশ নাট্যোৎসব : কলকাতা প্রতিনিধি জানান, গত শুক্রবার থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে নান্দীপট আয়োজিত ‘প্রাঙ্গণেমোর বাংলাদেশ নাট্যোৎসব-২০১৭’। সন্ধ্যায় কলকাতার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কাউন্সিল রিলেশন (আইসিসিআর)-এর সত্যজিত রায় অডিটোরিয়ামে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই নাট্যোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়।

৬ দিনব্যাপী এই নাট্যোৎসব চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চায়িত হবে প্রাঙ্গণমোরের জনপ্রিয় ৭টি নাটক।

নাট্যোৎসবের উদ্বোধক ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক বিভাস চক্রবর্তী, অভিনেতা-নাট্যকার- নির্দেশক ও তৃণমূলের সংসদ সদস্য অর্পিতা ঘোষ, ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (কলকাতা) পরিচালক গৌতম দে এবং বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেতা-নাট্যকার ও নির্দেশক মামুনুর রশীদ, অভিনেতা ও নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকী, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. মোফাকখারুল ইসলাম।

নাট্যোৎসব চলাকালীন সময় প্রাঙ্গণেমোর নাট্যদল কলকাতার বিশিষ্ট ৭ জন নাট্যপ্রেমী ও নাট্য ব্যক্তিত্বকে সম্মানা প্রদান করবে। তারা হলেন অমলেশ দাশগুপ্ত, সেলিম উর রহমান, মনতোষ কুমার সাহা, সৌমিত্র মিত্র, সমর মিত্র, গৌতম হালদার ও অঞ্জন কাঞ্জিলাল।

 

সর্বশেষ খবর