সোমবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

পায়রায় সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমদানিকৃত এলএনজি (লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস) দিয়ে নির্মিত হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুেকন্দ্র। এ জন্য জার্মানির সিমেন্স কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ২.৮ বিলিয়ন ডলার অর্থমূল্যের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। পটুয়াখালীর পায়রায় তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুেকন্দ্রটিতে এলএনজি সরবরাহের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে সমুদ্রবন্দরও। রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে গতকাল রাষ্ট্রায়ত্ত নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে সিমেন্সের প্রতিনিধিরা এ উপলক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

নর্থ-ওয়েস্ট কোম্পানির পক্ষে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খুরশেদুল আলম এবং সিমেন্সের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সিইও সুনীল মাথুর এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. টমাস প্রিনজ, সিমেন্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রবাল ঘোষ, পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ প্রমুখ। ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এই কেন্দ্রটির এফিসিয়েন্সি ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ ৪০ শতাংশ যে তাপ বের হয়ে যাবে তা কীভাবে সংগ্রহ করে কাজে লাগানো যায় এর উপায় বের করা প্রয়োজন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। এর পাশে আরও ১০০ একর জমিতে এলএনজিভিত্তিক এই বিদ্যুেকন্দ্রটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে যৌথ মালিকানায় নির্মিত বিদ্যুেকন্দ্রটির প্রথম অংশের কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ হবে। সে সময় এই কেন্দ্র থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর ওই বছরের ডিসেম্বর মাসেই আরও ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বাকি বিদ্যুৎ ২০২১ সালের শেষে  উৎপাদন সম্ভব হবে। বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ চাহিদা বিবেচনায় রেখে বৃদ্ধি করা হচ্ছে এর উৎপাদন, উন্নত করা হচ্ছে বিতরণ ব্যবস্থা। এ ছাড়া ক্লিন এনার্জি প্রসারের জন্য এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জানা যায়, বিদ্যুেকন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ৮০ শতাংশ অর্থঋণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া সিমেন্স কক্সবাজারের মহেশখালীতে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের আরেকটি বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করবে। এ জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে সিমেন্সের শিগগিরই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। অন্যদিকে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি এরই মধ্যে চীনের সহায়তায় ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করছে। সেই প্রকল্পের ২৬ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুরশেদুল আলম জানান, সমুদ্রপথে আমদানি করা এলএনজি গ্যাস এই বিদ্যুেকন্দ্রে সরবরাহের সুবিধার্থে পায়রায় একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর