মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রহীম ইন্ডাস্ট্রিজের ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নামমাত্র মূল্যে রহীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে ৪০০ কোটি টাকার একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান ২৫০ কোটি টাকায় বিক্রির প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা করে বাদীপক্ষ নিজেদের পক্ষে রায় পাওয়ায় এই অবস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের আওতাধীন রহীম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বিক্রির জন্য সরকার ১৯৭৭ সালে দরপত্র আহ্বান করে। তাতে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছিল মাস্টারস ইন্ডাস্ট্রিজ। তারা ১ কোটি ৬৭ লাখ ১ হাজার টাকায় রহীম মেটাল কিনে নেয়। ১৯৭৯ সালের ৭ মার্চ মাস্টারস ইন্ডাস্ট্রিজ ডাউন পেমেন্ট বাবদ ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ২৮০ টাকা পরিশোধ করলে সরকার তাদের কাছে এই সম্পত্তি হস্তান্তর করে। অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী মাস্টারস ইন্ডাস্ট্রিজ সমুদয় টাকা সরকারকে পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৯১ সালের ২৮ জানুয়ারি তাদের নোটিস দেওয়া হয়। নোটিস দিলেও তারা টাকা পরিশোধ না করে উল্টো সরকারের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে দেওয়ানি মামলা করে। আদালত সরকারপক্ষে মামলা খারিজ করে আদেশ দেওয়ার পর ২০০২ সালের ২৯ জুলাই সরকার মাস্টারস ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে করা বিক্রয় চুক্তি বাতিল ও জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করে। ২০০২ সালের ৫ আগস্ট বিএসইসি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের দখলে নেয়। সূত্র জানায়, বিএসইসি নিজেদের দখলে নেওয়ার পর ক্রেতাপক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে রিট পিটিশন করলে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রির ওপর আদালত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুটি রিট পিটিশনের রায়ের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মিস পিটিশন (সিএমপি) দাখিল করা হয়েছে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ আগস্ট এ-সংক্রান্ত একটি রিট পিটিশন (আপিল নম্বর ১১৩০/২০১৬) হঠাৎ করেই আদালতের কজ লিস্টে উঠে আসে। ওই তারিখেই সরকারের বিরুদ্ধে রায়ও হয়। রায়ে এই সম্পত্তি মাত্র ২৫০ কোটি টাকায় হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। অবশ্য এ বিষয়ে সরকারপক্ষ অর্থাৎ শিল্প মন্ত্রণালয় বা বিএসইসি এখন পর্যন্ত কিছুই জানে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তেজগাঁওয়ের মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জমি, স্থাপনাসহ এই সম্পত্তি নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করা হলে সরকার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এ সম্পত্তি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর