সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রংপুর আওয়ামী লীগে স্বস্তি, জাপায় অস্বস্তি অপেক্ষায় বিএনপি

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে আওয়ামী লীগে। দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টি একজনকে মনোনয়ন দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দুই নেতা   প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেওয়ায় দলে অস্বস্তি শুরু হয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে  আছে বিএনপি। শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের রংপুর জেলা ও মহানগরের নেতা এবং মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে বৈঠক করে মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুকে দলীয় মনোনয়ন দেন। প্রধানমন্ত্রী ভেদাভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাদের নির্দেশও দিয়েছেন। গতকাল সকালে সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু ঢাকা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে এসে পৌঁছলে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। সেখান থেকে বিপুল সংখ্যক গাড়িবহরে নিজ বাসায় আসেন তিনি। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দল ঝন্টু ভাইকে মনোনয়ন দিয়েছে। এতে দুঃখ নেই। এখন দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনাই হবে আমাদের বড় কাজ। আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী রাশেক রহমান বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাব না। দলের সম্মান রাখতে দলীয় প্রার্থীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। জাতীয় পার্টি মেয়র প্রার্থী হিসেবে মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মনোনয়ন দেয়। আট মাস আগে দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মোস্তফার নাম ঘোষণা করেন। তখন থেকেই মোস্তফা দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণা শুরু করেন। বাধা হয়ে দাঁড়ান দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন। আসিফ বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করলে দল হয়তো বহিষ্কার করবে। তাতে আমার দুঃখ নেই। মেয়র পদে নির্বাচন করব, এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। জেলা ও মহানগরের অনেক নেতা-কর্মী আমার সঙ্গে আছেন। দলের আরেক নেতা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম আবদুর রউফ মানিকও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। চার-পাঁচ মাস ধরে তিনি প্রচারণাও চালাচ্ছেন। মানিক বলেন, নির্বাচন করার জন্যই তো প্রচারণা চালাচ্ছি। তবে জাপার মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, লাঙ্গলের যে জোয়ার বইছে তা ঠেকানোর সাধ্য কারও নেই। দলের কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাতে কোনো সমস্যা হবে না। এরশাদের লাঙ্গল বিপুল ভোটে জয়ী হবে। মেয়র পদে বিএনপি ও যুবদলের চার নেতা আলোচনায় রয়েছেন। এরা হলেন— মহানগর বিএনপির সভাপতি মোজাফফর হোসেন, সহসভাপতি কাউসার জামান বাবলা, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম ও জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু। তবে মাঠে প্রচারণায় আছেন কাউসার জামান বাবলা ও নাজমুল আলম নাজু। গত নির্বাচনে কাউসার জামান বাবলা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এবারও তারই মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে শোনা যাচ্ছে। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু বলেন, অনেকেই মনোনয়ন চাইছেন। প্রচারণাও চালাচ্ছেন। তবে আমরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

একজনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ : মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বাবু মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে মেয়র পদে চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন। এরা হলেন— জাতীয় পার্টি মনোনীত মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ এবং আবদুল মজিদ বীরপ্রতীক। গতকাল পর্যন্ত ৩৩টি সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য ৩১ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের জন্য চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর