ফেসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে রংপুর সদর উপজেলার ঠাকুরপাড়ায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের উচ্চতর কমিটি গঠন করেছে সরকার। রংপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহেদুজ্জামান জানান, ২৪ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগমকে প্রধান করে গঠন করা কমিটি বৃহস্পতিবার হাতে পাওয়া গেছে। কমিটির সদস্যরা ৪ ডিসেম্বর ঘটনাস্থল তদন্তে আসবেন।  এর আগে ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক চার সদস্যের কমিটি গঠন করে সে কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দিতে ব্যর্থ হয়ে আরও দুই দফায় ১৭ দিন সময় চেয়ে নেয় কমিটি। ৩ ডিসেম্বর সে মেয়াদও শেষ হবে বলে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু রাফা মো. আরিফ জানিয়েছেন।  এদিকে হামলার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে পুলিশ যে পাঁচজনকে চিহ্নিত করেছিল, তাদের চারজনই রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ঘটনার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। প্রসঙ্গত, ফেসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে ১০ নভেম্বর বিকালে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক হামলাকারী নিহত এবং সাত পুলিশসহ আহত হয় ৩০ জন। এ ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে পাঁচজনকে চিহ্নিত করে পুলিশ। তারা হলেন— বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সভাপতি মাওলানা ইনামুল হক মাজেদি, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ রানা, সদরের খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম এবং খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য মাওলানা মোস্তাইন বিল্লাহ। এ ছাড়া হামলার ঘটনায় জনবল ও অর্থ জোগানদাতা হিসেবে ঠাকুরপাড়ার পাশের মমিনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের স্বামী রংপুর জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফজলার রহমানকে চিহ্নিত করা হয়।

এদের মধ্যে জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে ঘটনার পরেরদিন গ্রেফতার করা হলেও অন্যরা রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।