বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

লেকহেড স্কুলে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া রাজধানীর ধানমন্ডি এবং গুলশানে অবস্থিত লেকহেড গ্রামার স্কুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। গতকাল দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেয়। স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হবেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার। সেনাবাহিনীর শিক্ষা কোরের কর্মকর্তাদেরও ওই কমিটিতে রাখতে বলা হয়েছে। প্রিন্সিপালও হবেন সেনা কর্মকর্তা। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, আখতার ইমাম ও রাশনা ইমাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে রাশনা ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, সাত দিনের মধ্যে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করতে হবে। এই কমিটিতে সেনাবাহিনীর দুজন প্রতিনিধিকে রাখতে বলা হয়েছে। দুই সেনা প্রতিনিধির মধ্যে শিক্ষা কোরের কর্মকর্তাকে স্কুলটির অধ্যক্ষ করতে বলা হয়েছে। এই কমিটি স্কুলটির নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করবে। আশা করছি সাত দিনের মধ্যে স্কুলটি খুলে যাবে। অনিশ্চয়তা কেটে গেল। অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, লেকহেড স্কুলটির অনেক অনিয়ম। গভর্নিং বডি নেই, শিক্ষকদের বিজ্ঞাপন দিয়ে নিয়োগ করা হয়নি। এ ছাড়া স্কুলটির বিরুদ্ধে সরকারের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো— স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা, অনেক সাবেক শিক্ষক, বর্তমান শিক্ষক, কিছু অভিভাবকের জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা আছে। এ ব্যাপারে আমরা আদালতকে কিছু ক্লাসিফায়েড তথ্য দিয়েছি। তিনি জানান, সর্বোচ্চ আদালত আদেশ দিয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে শিক্ষা সচিবের অধীনে ঢাকার ডিভিশনাল কমিশনারকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি কমিটি করার জন্য। এই কমিটি স্কুল পরিচালনার ব্যাপারে দেখভাল করবে। সাত দিনের মধ্যে এসব হলেই স্কুলটি আবার চালু করা যাবে। আপিল বিভাগে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই পরিচালনা পর্ষদের অধীনেই স্কুলটি পরিচালিত হবে। হাই কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল গ্রহণ করেছে আদালত। জঙ্গি কার্যক্রমে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশের পর ৭ নভেম্বর ঢাকার জেলা প্রশাসন লেকহেড গ্রামার স্কুল বন্ধ করে দেয়। পরে স্কুলের মালিক খালেদ হাসান মতিন ও ১২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক হাই কোর্টে রিট করেন। শুনানি শেষে ১৪ নভেম্বর হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেকহেড গ্রামার স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে ভবিষ্যতে ওই স্কুলের বিষয়ে জঙ্গিবাদসহ সরকারের যে কোনো তদন্তে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেয় আদালত। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে। ১৯ নভেম্বর আপিল বিভাগ স্কুলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বা শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকলে তা আদালতে জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেয়। বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এলে স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করলে আপিল বিভাগ শুনানি করে আদেশ দেয়।

সর্বশেষ খবর