সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নাসিরনগরে হামলায় চার্জশিট

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

নাসিরনগরে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে তাণ্ডবের ঘটনায় ২২৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশ। গতকাল বেলা ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমানের কাছে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু জাফর এ চার্জশিট জমা দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাহবুবুর রহমান জানান, আগের সব নথিপত্র দেখে চার্জশিট ঠিক আছে কি-না তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আজ সোমবার সংশ্লিষ্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নাসিরনগর থানার ওসি মো. আবু জাফর জানান, চার্জশিটে ২২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা কেউ সরাসরি হামলায় অংশ নেয় কেউ বা নেপথ্যে থেকে কাজ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। চার্জশিটে ১৪৩, ৪৪৭, ৩২৩, ৩৮০, ২৯৫, ২৯৫ (ক), ৪৪৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। চার্জশিটে আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন— নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (বহিষ্কারের সুপারিশকৃত) ফারুক মিয়া, চাপরতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (বহিষ্কারের সুপারিশকৃত) সুরুজ আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হান্নান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম চকদার, হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জামাল, হরিপুর গ্রামের কাপ্তান মিয়া, বিল্লাল হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা মুখলেছুর রহমান, মো. জাকির হোসেন। তবে তারা সবাই বর্তমানে জামিনে আছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হামলার ঘটনায় গৌর মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে নাসিরনগর থানায় মামলা করেছিলেন। মামলার তদন্ত করেন নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শওকত হোসেন। দীর্ঘ প্রায় এক বছরের বেশি সময় তদন্তের পর তিনি মামলার অভিযোগপত্র তৈরি করেছেন।

উল্লেখ্য, হরিণবেড় ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের রসরাজ দাস নামক এক যুবক নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে পবিত্র কাবা শরিফের ওপর শিবমূর্তি স্থাপন করে ছবি পোস্ট দেন। এ অভিযোগ তুলে গত বছরের ৩০ অক্টোবর নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা হয়। পরে আরও কয়েক দফা একাধিক বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা ৮টি মামলা করে নাসিরনগর থানায়। এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের করা মামলায় প্রায় ৩ হাজার লোককে আসামি করা হয়।

সর্বশেষ খবর