বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ফেরতে এবার পাঁচ দফা

সংকটে রোহিঙ্গা

প্রতিদিন ডেস্ক

রোহিঙ্গা ফেরতে এবার পাঁচ দফা

বাংলাদেশে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ৫ দফা সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার পুনর্বার বৈঠকে বসে এ সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জেফ্রি ফেল্টম্যান। খবর এনআরবি নিউজের।

ফেল্টম্যান মিয়ানমার সংকটের যেসব সুপারিশ তুলে ধরেন সেগুলো হলো— রাখাইন স্টেটের অ্যাডভাইজরি

কমিশনের সুপারিশমালাকে ভিত্তি ধরে শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুতদের

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, প্রত্যাবাসন হতে হবে উচ্ছেদকৃতদের মূল ভূমিতে বা পছন্দনীয় কাছাকাছি কোনো স্থানে, অবাধ চলাফেরার স্বাধীনতা থাকতে হবে যাতে তারা জীবন ধারণের মৌলিক প্রয়োজনগুলো সংস্থান করতে পারে, প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মানদণ্ড উদারভিত্তিক হতে হবে এবং সব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। এর আগে গত ৬ নভেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ করে। যেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্টেটমেন্ট গ্রহণের ৩০ দিন পর নিরাপত্তা পরিষদে বিবৃতি দিতে অনুরোধ জানানো হয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে রাজনৈতিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জেফ্রি ফেল্টম্যান এ বিবৃতি প্রদান করেন। নিরাপত্তা পরিষদের এ সভায় বক্তৃতা করেন যৌন সহিংসতাবিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমীলা প্যাটেন। সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরকালে তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নারী ও শিশুদের ওপর সংঘটিত ভয়াবহ যৌন সহিংসতার যে চিত্র দেখেছেন তা সভায় তুলে ধরেন। প্যাটেন বলেন, ‘যারা এখনো যৌন সহিংসতার ক্ষতচিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন তাদের সকলেই আমাকে বলেছেন, মিয়ানমারের সেনা সদস্যরা গণধর্ষণ, জনসম্মুখে বিবস্ত্রকরণ এবং সেনাক্যাম্পে আটক রেখে দিনের পর দিন রোহিঙ্গা নারীদের যৌনদাসত্ব গ্রহণে বাধ্য করার মতো জঘন্য কাজগুলো করেছে।’

এ ছাড়া নিরপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ এ সভায় বক্তব্য রাখেন। তারা রোহিঙ্গাদের অব্যাহতভাবে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন। সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ১০০-৪০০ জন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, রাখাইন প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি।’ গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির বিষয়ে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করে বলেন, এ চুক্তির শর্তানুযায়ী শীঘ্রই জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হবে এবং মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে।

রাষ্ট্রদূত মাসুদ তাঁর বক্তব্যে রাখাইন প্রদেশের বাস্তুচ্যুত অসহায় নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান, সহিংসতার নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন তদন্ত ও বিচার, রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তন এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে একত্রে বসবাস উপযোগী পরিবেশ তৈরির উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন।

সর্বশেষ খবর