রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মেয়রকে ধাওয়া ময়মনসিংহে, সংঘর্ষ লালমনিরহাটে

ময়মনসিংহ ও লালমনিরহাট প্রতিনিধি

মহান বিজয় দিবসে মুক্তাগাছার বিজয় মঞ্চের ব্যানারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও জয় বাংলা স্লোগান না রাখায় এবং পৌর মেয়র বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে মঞ্চ ভাঙচুর ও মেয়রকে ধাওয়া করার ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, গতকাল সকালে মুক্তাগাছা পৌরসভার সামনে রক্তিম স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, উপজেলা চেয়ারম্যান জাকারিয়া হারুন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন ফুলের তোড়া নিয়ে যান। তারা সেখানে দেখেন বিজয় মঞ্চের ব্যানার এবং পৌরসভার অন্যান্য কর্মসূচির কোথাও বঙ্গবন্ধুর ছবি ও জয় বাংলা স্লোগান ব্যবহার করা হয়নি। এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। পরে সেখানে উপস্থিত পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম শহিদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিরূপ মন্তব্য করেন। তখন উত্তেজিত লোকজন মঞ্চ ভাঙচুর এবং পৌর মেয়রকে ধাওয়া করেন। মেয়র কর্মচারীদের সহযোগিতায় দৌড়ে পৌর ভবনে আশ্রয় নেন। পরে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শহর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, তাঁতী লীগ, ছাত্রলীগ, ওলামা লীগসহ লোকজন মেয়রের বিচার দাবিতে শহরে মিছিল করেন। মিছিল শেষে মুক্তাগাছা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় দ্রুত মেয়রের অপসারণ ও বিচার দাবি করা হয়। লালমনিরহাটে সংঘর্ষ : লালমনিরহাটে বিএনপির বিজয় র‌্যালিতে আওয়ামী লীগের হামলায় উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সাংবাদিক, পুলিশসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা ভাঙচুর করেছেন জেলা শ্রমিক দলের অফিস। গতকাল বেলা ১১টায় রেলওয়ে শ্রমিক দল কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সকালে জেলা রেলওয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল অফিস থেকে জেলা বিএনপি একটি বিজয় র‌্যালি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা র‌্যালিতে বাধা দেন। এরপরও বিএনপি নেতা-কর্মীরা র‌্যালি নিয়ে সড়কে ওঠামাত্রই আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী তাদের বিজয় র‌্যালিতে হামলা করেন। শুরু হয় উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় ছবি তুলতে গিয়ে এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি মেহেদী হাসান জুয়েল ও প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, সহকারী পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) সুশান্ত কুমার সরকার, এসআই আলমগীরসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের শান্তিপ্রিয় বিজয় র‌্যালিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা। তিনি হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান। বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির এক কর্মী প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে ছেড়েছে। ওই কর্মীকে খুঁজে না দেওয়া পর্যন্ত তাদের মিছিল করতে বারণ করা হয়েছিল মাত্র। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজ আলম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর