আজ শুভ বড়দিন। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের দিন। এই দিনে খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যিশু জন্ম নিয়েছিলেন। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিস্টধর্মানুসারীরাও আজ আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করবেন। বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাণী দিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটির দিন। বড়দিনের উৎসব শুরু হয়েছে গতকাল রাত থেকেই। উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জায় (পবিত্র জপমালার গির্জা) বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যার দিকে গির্জায় গিয়ে দেখা যায়, লাল-নীল বাতি দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে গির্জা। প্রচুর জরি লাগিয়ে গির্জার ভিতর রঙিন করা হয়েছে। ভিতরে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। গির্জার মূল ফটকের বাইরে ছোটখাটো একটি মেলা বসেছে। মেলার দোকানগুলোতে বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের কার্ড, নানা রঙের মোমবাতি, সান্তা ক্লজের টুপি, জপমালা, ক্রিসমাস ট্রি, যিশু-মরিয়ম-যোসেফের মূর্তিসহ নানা জিনিস বিক্রি হতে দেখা গেছে। গির্জার পাশের কবরস্থানে অনেককে মোমবাতি জ্বালাতে দেখা গেছে। চারদিকে ছোটাছুটি করছিল শিশুরা। রাতে দুই দফায় প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করেন রাজধানীর খ্রিস্টধর্মাবলম্বীরা। আজ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কয়েক দফা প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে গির্জাগুলোতে। রাজধানীর তেজগাঁও গির্জার পাশপাশি কাকড়াইল এবং রমনার গির্জাতেও গতকাল বিশেষ প্রার্থনায় ছিল খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের ভিড়। কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথিড্রালের রঙিন জরি, কাপড় আর বেলুনে সাজানো হয়েছে প্রার্থনা কক্ষ। বড়দিনে যিশুখ্রিস্টের জন্মের সময়কে স্মরণ করতে শিশু যিশুখ্রিস্টের প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে গোয়াল ঘর। সেখানে যিশুখ্রিস্টের প্রতিকৃতিসহ রাখা হয়েছে মাতা মেরি, যোশেফ, তিনজন পণ্ডিত, রাখাল ও কয়েকটি পশুর প্রতিকৃতি। বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেকে বড়দিনকে বেছে নেন। বড়দিনের পূর্বপ্রস্তুতির নানা আয়োজনে কয়েক দিন ধরেই সরগরম খ্রিস্টানপাড়াগুলো। উদ্বোধন করা হয়েছে প্রতীকী গোশালা, পাশাপাশি চলছে কীর্তন। এদিকে বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলোতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বড়দিনের উৎসবকে ঘিরে আনন্দমুখর আয়োজনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই অভিজাত হোটেলগুলো। সোনারগাঁও, র্যাডিসন ব্লু, লা মেরিডিয়ানসহ নামি-দামি হোটেলগুলো সেজেছে রঙিন বাতি, ফুল, আর প্রতীকী ক্রিসমাস ট্রিতে। সেই সঙ্গে চলছে বড়দিনের গান-বাজনা।