সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিএনপিতে মুহিত না এহিয়া আওয়ামী লীগে স্বপন না চয়ন

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

বিএনপিতে মুহিত না এহিয়া আওয়ামী লীগে স্বপন না চয়ন

সিরাজগঞ্জের-৬ (শাহজাদপুর) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা সভা, সমাবেশ, গণসংযোগ, পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন টাঙ্গিয়ে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও তারা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হওয়ার পর দলটির দলীয় কার্যক্রম স্থিমিত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এম এ মতিনের ছেলে এম এ মুহিত দলের হাল ধরেন। নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে  তাদের সাহস জোগাতে থাকেন তিনি। আগামী সংসদ নির্বাচনে এম এ মুহিত শাহজাদপুর থেকে মনোনয়ন চাইবেন। এ আসনে আরও মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য কামরুদ্দিন এহিয়া খান মজলিস, উপজেলা বিএনপির সভাপতি হোসাইন শহীদ মাহমুদ, পৌর বিএনপির সভাপতি তারিকুল ইসলাম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা গোলাম সরোয়ার। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যাকে মনোনয়ন  দেবেন তার পক্ষেই নেতা-কর্মীরা কাজ করবেন। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আরিফুজ্জামান জানান, বিগত নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হলে আসনটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

এম এ মুহিত জানান, দল ক্ষমতায় এলে এবং তিনি নির্বাচিত হলে শাহজাদপুরকে দারিদ্র্য, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী চয়ন ইসলাম বিজয়ী হয়ে শাহজাদপুরের উন্নয়নের পাশাপাশি দলীয় কর্মকাণ্ড উজ্জীবিত করেন। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন না পেয়ে উপজেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে গুটিয়ে নেন। এক পর্যায়ে ২০১৫ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিবুর রহমান স্বপন ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে উপজেলা-পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। বিএনপির ভোটব্যাংক হিসেবে খ্যাত শাহজাদপুরে দলটির ভোট অনেকাংশে কমে গেছে। বিশেষ করে সাংবাদিক শিমুল হত্যা ঘটনায় স্বপনের নিরপেক্ষতা দলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে। তার কঠোর নেতৃত্বের কারণে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় শাহজাদপুরে  কোনো মিছিল-মিটিং হয়নি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি তার উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে যেতে শুরু করেছে শাহজাদপুরের চিত্র। এবারের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী। ইতিমধ্যে জোর প্রচারণায় নেমেছেন তিনি। অন্যদিকে দীর্ঘদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও নির্বাচনী আমেজ শুরু হওয়ার পর সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য চয়ন ইসলাম মাঠে নেমেছেন। তিনিও প্রতি ইউনিয়নে সমাবেশ, গণসংযোগ ও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। এ দুজন ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইতে পারেন বর্তমান আইন সচিবের ছোট ভাই শেখ আবদুল হামিদ লাভলু ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হায়দার। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন জানান, শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তারপক্ষেই উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।

সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান জানান, দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের ভালোবাসায় দল থেকে মনোনীত হলে আবারও নৌকার জয় হবে। জোটগত নির্বাচন হলে বিএনপি জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামী এখানে বিএনপি প্রার্থীকেই সমর্থন জানাবে বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। দলটির প্রায় ৪০ হাজার ভোট রয়েছে, যা বিএনপি প্রার্থীর বিজয়ে বড় নিয়ামক। বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির তেমন তৎপরতা না থাকলেও দলটির শাহজাদপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মোক্তার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সাহান চৌধুরী দুজনই মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর