সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিক্ষকদের অনশন চলছেই, অসুস্থ ৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষকদের অনশন চলছেই, অসুস্থ ৪০

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। গতকালের তোলা ছবি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধান শিক্ষকের পরের স্কেলেই বেতন নির্ধারণের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন চলছেই। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গতকাল দ্বিতীয় দিনের অনশনে প্রায় ৪০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। আমরণ অনশনে গতকাল সংহতি জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। গত শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অনশনে সারা দেশের প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষক অংশ নিয়েছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, শিক্ষকরা শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন। অনেকে পলিথিন মাথায় দিয়ে রাত কাটাচ্ছেন। মাথার ওপরে কোনো ত্রিপল-শামিয়ানা না থাকায় কুয়াশায় জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছেন তারা। গতকাল পর্যন্ত সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কেউ আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আসেননি। আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের অনশন চলবে। গতকাল পর্যন্ত অসুস্থ শিক্ষকদের মধ্যে সিদ্দিকুর রহমান, আবু তালেব, সালেহা আক্তার মুক্তা, রফিকুল ইসলাম, আবদুর রহিম, এখলাসুর রহমান, ফিরোজ আলম, মো. আলাউদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ডাকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন এতে অংশ নিয়েছে। শিক্ষকদের বক্তব্য, তাদের এক দফা দাবি- বেতন বৈষম্য নিরসন করতে হবে। শিক্ষকরা বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের বেতন গ্রেডে একধাপ পার্থক্য ছিল। পরে ২০০৬ সালে এসে দুই ধাপ পার্থক্য সৃষ্টি হয়। ২০১৪ সালে তিন ধাপ পার্থক্য সৃষ্টি হয়। প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে উন্নীত হলেও সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডেই রয়ে গেছেন। ২০ বছর চাকরি করার পর একজন সহকারী শিক্ষক যে বেতন পান, একজন প্রধান শিক্ষক চাকরির শুরুতেই সেই বেতন পান। এর ফলে পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যের শিকার হন। এটি আমাদের অপমানজনক আর বৈষম্যের। এ বৈষম্য অবিলম্বে দূর করার দাবি তাদের। বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি তপন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ অনশন চলবে।’ তিনি বলেন, ‘১ জানুয়ারি সারা দেশে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। আমরা কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন করতে চাই না। আমরা চাই এর আগেই আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক।’ এখন পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার কোনো আশ্বাস পাননি বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ খবর