বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শালিসির নামে বর্বরতা কিশোরীর ওপর

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুর শহরে মঙ্গলবার শালিস বৈঠকে গরিবের এক কিশোরী মেয়েকে ‘খারাপ’ আখ্যা দিয়ে জুতাপেটা করা হয়েছে। এ ঘটনায় শহরের মধ্য খাগদি এলাকার অধিবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেছেন, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশকে অবহিত করেছেন। ডিসি বলেন, মেয়েটিকে অপহরণ নিয়ে যা হয়েছে তা শালিস বৈঠকে মীমাংসাযোগ্য নয়। মীমাংসার নামে তাকে জুতাপেটা করাটা খুবই অন্যায়। যারা এমন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র জানায়, ১৮ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে মধ্য খাগদির এই কিশোরীকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় একই এলাকার কুদ্দুস শরীফের ছেলে হাসান শরীফ। পরে সে মেয়েটিকে তামান্না নামে এক নারীর কাছে বিক্রি করে দেয়। খবর পেয়ে কিশোরীর পরিবার সদর উপজেলার খাকছড়ার করম বাজার এলাকায় গিয়ে ২২ ডিসেম্বর উদ্ধার করে। এ নিয়ে শালিস বৈঠক হয়। শালিসরা কিশোরীকে ‘খারাপ মেয়ে’ বলে রায় দেন এবং তাকে ১০টি জুতার বাড়ি মারার নির্দেশ দেন। তখন আকলিমা বেগম নামে এক নারী মেয়েটিকে জুতাপেটা করেন। বৈঠকে হাসান শরীফকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাকেও ১০টি জুতার বাড়ি মারার নির্দেশ দেওয়া হয়।

লাঞ্ছিতা কিশোরীর ভাই জসিম ফকির বলেন, ‘আমার বোনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বিক্রি করে দিল। আমরাই তাকে উদ্ধার করলাম। আর শালিসরা আমার বোনকে দোষারোপ করলেন। আমরা গরিব বলেই তারা এমন করেছেন।’ কিশোরী বলেছে, ‘আমার ওপর যে জুলুম হয়েছে আমি তার বিচার চাই।’ শালিসে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আইয়ুব খান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজাম খান, সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক খান, স্থানীয় প্রভাবশালী সেলিম মীরা, খবির খান, আকলিমা বেগম প্রমুখ। শালিস আইয়ুব খান, মুজাম খান, সামসুল হক খানের সিদ্ধান্তে ওই কিশোরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ বলেন, ‘এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর