শনিবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

শীতকালীন সবজি চাষে ভাগ্য বদল কৃষকের

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

শীতকালীন সবজি চাষে ভাগ্য বদল কৃষকের

শীত মৌসুমে কৃষকরা সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ভালো ফলন ও বেশি দাম পাওয়ায় সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। আবার বছরের ১২ মাস বিভিন্ন রকম সবজি চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ। পরপর দুবার বন্যা হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সবজি চাষ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বাজারে সবজির দাম ভালো থাকায় দিন দিন সবজি চাষের দিকে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। এ কারণে জেলার হাজার হাজার বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মুলা, গাজর, পালংশাক, শিম ও বেগুন। এবার সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি কাজিপুর, শাহজাদপুর রায়গঞ্জ, সলঙ্গা, উল্লাপাড়া ও কামারখন্দ উপজেলায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। শিয়ালকোল, ভদ্রঘাট, পিপুলবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ রোড, সলঙ্গা, চান্দাইকোনাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন সবজির হাট বসছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে হাট থেকে সবজি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেক পাইকার সরাসরি জমি থেকে সবজি কিনে নিয়ে যান। আবার অনেক কৃষক নিজের জমির উৎপাদিত সবজি নিজেই বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। তবে সবজিতে পোকার আক্রমণ হলে কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের।

 বহুলি গ্রামের কৃষক আবুল কালাম জানান, সবজি চাষ তার ভাগ্য খুলে দিয়েছে। আগে যখন ধান-পাটের চাষ করতাম তখন ঋণ পরিশোধ হতো না। আর এখন সবজি চাষ করায় সংসারে বাড়তি আয় হচ্ছে। সারা বছরের খরচ বাদেও বাড়তি টাকা থাকছে। ভদ্রঘাট গ্রামের কৃষক আবু মুছা জানান, এক বিঘা জমিতে সবজি চাষ করে সংসার চালানোর পাশাপাশি বাড়তি টাকায় ২০ ডেসিমাল জায়গা কিনেছি। জগত্গাতী গ্রামের কোরবান আলী জানান, এক সময় তিনি মানুষের বাড়ি কামলা খাটতেন। সেখান থেকে এসে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে সবজি চাষ শুরু করেন। এখন তিনি সবজি বিক্রি করে দুই বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। খোকসাবাড়ি এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে প্রায় এক লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। আর এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার মতো। সলঙ্গা ফেওকান্দি গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল হোসেন জানান, এক বিঘা জমিতে উন্নত জাতের টমেটো আবাদ করা হয়েছে। বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় খরচ বাদে লক্ষাধিক টাকা থাকবে। ফেওকান্দি গ্রামের কৃষক মাহমুদুল হাসান জানান, ফুলকপি ও বাঁধাকপিতে মাঝে-মাঝেই পোকার আক্রমণ হয়। কিন্তু কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে ধরনা দিলেও তারা কোনো সহযোগিতা করে না। সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, বৃষ্টির কারণে জেলায় সবজি চাষ ভালো হওয়ার পাশাপাশি দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। সবজি চাষে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে। সেগুলো জানার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর