মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

আমরণ অনশনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আজ থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবে। জাতীয়করণের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীকরণের দাবিতে গত ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা অবস্থান ধর্মঘট পালন করে আসছেন তারা। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা বেতন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন  তাই প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী জাতীয়করণের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ভোলার মধ্য চরপাতা সিদ্দিকীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেনের জানান, তাদের শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি ও নতুন বই যথানিয়মে পেলেও শিক্ষকরা সরকারি সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে।

জানা গেছে, টানা আটদিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের পরও সরকারের কোনো মহল থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস না পেয়ে আজ থেকে অনশনে নামবেন এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তীব্র শীতেও সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় আন্দোলন করে যাচ্ছেন। রাতে শুধু একটি কাঁথা বা কম্বল মুড়ি দিয়ে রাতযাপন করছেন প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তাতেই। হাড়কাঁপা শীতের আন্দোলনে ইতিমধ্যেই অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী বলেন, সরকারপক্ষের কেউ এখনো আমাদের সঙ্গে কথা বলতে আসেননি। সারা দেশ থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকরা আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। জাতীয়করণের দাবি আদায় ছাড়া আমরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াব না। শিক্ষকরা জানান, ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে রেজিস্ট্রার বেসরকারি প্রাথমিক ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের বেতন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে বিগত সরকারের সময়ে ধাপে ধাপে বেতন বাড়ার পাশাপাশি ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি বর্তমান সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকরাও পাঠদান করে থাকে। অথচ মাস শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ২২ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পান। অথচ ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা তেমন কোনো বেতন ভাতা পায় না। মাত্র ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক ২ হাজার ৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষক ২ হাজার ৩০০ টাকা ভাতা পান। বাকি মাদরাসা শিক্ষকরা ২৯ বছর যাবৎ বেতন-ভাতা হতে বঞ্চিত। যা এই দুর্মূল্যের বাজারে অমানবিক আর শিক্ষকদের অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।

সর্বশেষ খবর