মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্প

এক লাখ গৃহহীন পাবে ঘর

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

চলতি অর্থবছরে ১ লাখ গৃহহীন পরিবারকে তাদের নিজ জমিতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে আরও ৫ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে। এ ছাড়া কক্সবাজার খুরুস্কুল বিশেষ প্রকল্পে চলতি বছরে ৫০টি বহুতল ভবনের কার্যাদেশ দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে আলোচ্য প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ থোক থেকে বরাদ্দ চেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর মধ্যে ১ লাখ গৃহহীনকে ঘর নির্মাণ বাবদ ৯০০ কোটি; ১ হাজার ব্যারাক নির্মাণ বাবদ ৫০ কোটি ও খুরুস্কুল বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫০টি বহুতল ভবন নির্মাণ বাবদ ২০০ কোটি টাকার চাহিদা দেখানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০০৯ সালের জুনের মধ্যে ২ লাখ ১০ হাজার পরিবার পুনর্বাসন করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে। চলতি অর্থবছরে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের জন্য ২৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভুক্ত প্রকল্পে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বার্থে আরও ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা জরুরি বরাদ্দ প্রয়োজন। আলোচ্য বরাদ্দের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নেওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ছিল ১ হাজার ১৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা ২০১০ সালে শুরু হয়ে ২০১৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কাজের পরিধি বাড়ানোর ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ওই সময় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২০৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এরপর গত বছরের মে মাসে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর আট মাস বাড়ানো হয়। প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। প্রকল্প অনুমোদনের পর পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের সংশোধন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার পরিবারকে নিজ জমিতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে এবং ৪০ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে।

সংশোধিত প্রকল্প অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫০ হাজার পরিবারকে নিজ জমিতে ঘর করে দেওয়ার কথা। ২০ হাজার পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করার কথা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আরও ১ লাখ ১০ হাজার গৃহহীনকে ঘর দেওয়া হবে। আর ২০ হাজার পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে। ফলে এ খাতে পর্যাপ্ত টাকার প্রয়োজন হবে। উল্লেখ্য, ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। ২০১০ সালে গৃহীত হয় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। এর আওতায় দরিদ্র গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর নির্মাণের সামর্থ্য নেই তাদের নিজের জমিতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর